সাতক্ষীরা মুন্সিগঞ্জ উত্তর কদমতলায় ৪৬ বছরের রাস মন্দির, ঘড়বাড়ি ভাংচুর লুটপাট ও আহত ১২

আব্দুস সালাম, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি (সাতক্ষীরা): শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ  উত্তর কদমতলা (ফুলতলা) দীর্ঘ ৪৬ বছরের   রাস মন্দির ও শীতলা মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর  করেছে দুর্বৃত্তরা। মন্দিরে যাওয়ার পথে পাশের বাড়ি সুভাষ বাউলিয়া ও নগেন্দ্র বাউলিয়া ঘর ভাংচুর লুটপাট সহ আহত ১২/১৩ জন।  প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ১৩ ই এপ্রিল মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জ উত্তর কদমতলা ঐতিহ্যবাহী ৪৭ বছরের রাস মন্দির প্রাঙ্গণে অবস্থিত শীতলা মন্দির শীতলা পূজা আজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূজা শেষ, প্রসাদ বিতরণ শেষ, দর্শনার্থীরা ঘরে ফেরা শুরু করেছে ঠিক এমন সময় দুর্বৃত্তদের অতর্কিত হামলা শিকার হলো বাউলিয়া ভবনের চারটি পরিবার ১২ জন  শ্যামনগর সদর  হাসপাতালে  চিকিৎসাধীন। ১ জন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন  ও দুইজন আশঙ্কাজনক।

হামলার শিকার সুভাষ বাউলিয়া স্ত্রী পূর্ণিমা বাউলিয়া বলেন,প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে উত্তর কদমতলা গ্যারেজ এলাকার  শ্রীপদ মন্ডলের পু্ত্র পল্লব মন্ডল (১৯) এই ঘটনা ঘটায় নেতৃত্ব দিয়ে বংশীপুর আলিম বাহিনীর একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। 

তিনি বলেন, পল্লব এক মেয়েকে নিয়ে  বিলের ভীতরে গল্প করছিলো সেই ঘটনা  আমার ছেলে মিলন লোক জনকে বলে দেয়ায়  পল্লব ক্ষিপ্ত হয়ে  ৫০ থেকে ৮০  লোক নিয়ে লোকজন নিয়ে এসে সন্ধ্যায় আমাদের  অতর্কিতভাবে ইটপাটকেল ছোড়ে ধারালো অস্ত্র নিয়েওপর হামলা চালায়। 

আমরা ভয়ে পলাই তখন আমাদের না পেয়ে দরজা ভেঙে আমাদের দুই মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাত ধরে টেনে হিচড়ে  ঘরের বাইরে বের করতে থাকে,  তখন ছোট মেয়ে বিজলী ভয়ে চিৎকার করলে ওর বাবা ,কাকা   মেয়ে কে বাঁচতে  তারা বাইরে বেরিয়ে আসে আর তখনই ইট ছুড়ে মারতে থাকে সাথে লাটিশোটা নিয়ে আমাদের সবাই কে বেধর  মারে  এবং তার দলবল ঘরে থাকা টিভি, ল্যাপটপ, মোবাইল সাইকেল সহ সোনা গহনা সব নিয়ে যায়। 

ঘড় পুড়িয়ে দেয়ার জন্য আগুন জ্বালিয়ে দেয়,  আর কিছু লোক তাদের তাড়া করে মন্দিরে নিয়ে গিয়ে প্রতিমা ভাংচুর করে। তাছাড়াও আমার মেয়ের নাকে কানের গলার গহনা নিয়ে যায়। 

মুকুন্দ বাউলিয়া বলেন এই ঘটনা  বর্তমান মেম্বর আকবর আলী পাড় দাড়িয়ে থেকে  লীড দেয়।  আকবর আলী পাড় মেম্বরের মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এঘটনা  মেম্বর  আকবর আলী  থেকে লিড দিয়ে আলীম বাহিনীর এই হামলা করে। 

আহতরা হলেন উত্তর কদম তলা গ্রামের মৃত ফনিন্দ্র বাউলিয়া পুত্র নগেন্দ্রনাথ বাউলিয়া (৭০), তপন বাউলিয়া (৬০), নগেন্দ্র নাথ বাউলিয়ার তিন পুত্র সুভাষ বাউলিয়া (৫০), যতিন বাউলিয়া (৪০), গোবিন্দ বাউলিয়া (৪৫),যতিন বাউলিয়ার স্ত্রী   কৌশল্যা বাউলিয়া (৩৫) , সুভাষ বাউলিয়ার স্ত্রী পূর্ণিমা বাউলিয়া(৪৫), কন্যা মমতা বাউলিয়া (১৮),পুত্র মিলন বাউলিয়া ( ১৯) যতিন্দ্র বাউলিয়া কন্যা বিজলী বাউলিয়া (১১) , গোবিন্দ বাউলিয়া পুত্র নিত্যানন্দ বাউলিয়া (১৬)। 

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হুদা বলেন, আমরা ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি, এবং খুব দ্রুতই এই ঘটনার সাথে জড়িত দের গ্রেপ্তার করা হবে। এই বর্বরতার শিকার ও ন্যাক্কারজনক ঘটনায় স্থল পরিদর্শন করেছেন  উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন, উপজেলা vice-chairman প্রভাষক সাইদুজ্জামান সাঈদ, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান ভবতোষ মন্ডল। জেলা পরিষদ সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান ডালিমকুমার ঘরামি। মুন্সিগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন প্রমুখ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে এই বর্বরতা ঘটনায় স্থানীয় মেম্বার কে ঘটনাস্থলে না পেয়ে এলাকার মানুষের বক্তব্যে তার নেতৃত্ব দেওয়ার ঘটনা শুনে তীব্র ঘৃণা ও নিন্দা প্রকাশ করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এজাহার প্রস্তুতি চলছি।