সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার বানভাসী লক্ষাধিক মানুষের অবর্ননীয় দূর্ভোগ, বন্যা দূর্গতদের সাহায্যের আশ্বাসজেলা প্রশাসনের

খান নাজমুল হুসাইন, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ঃ

অবর্ননীয় দূর্ভোগের মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকার বানভাসি লক্ষাধিক মানুষ। প্রবল জোয়ারের চাপে বেঁড়িবাঁধ ভেঙে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আশাশুনি সদরের (আংশিক) ও শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের (আংশিক) অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছ। বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি। পানিতে ভেসে গেছে গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি। ধ্বসে পড়েছে শতাধিক কাঁচাঘরবাড়ি। রান্না-বান্না ও গৃহস্থালীর কোন কাজ করতে না পারায় শুকনা খাবারেই নিভাতে হচ্ছে তাদের পেটের ক্ষুধা। অনেকের বসত ঘর পানিতে ভেসে গেছে। কষ্টের কোন শেষ নেই দুর্গত এলাকার মানুষের। প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এর আগে কখনো তারা এতো পানি দেখেনি। তাই অতিদ্রæত সরকারি সহায়তা প্রত্যাশা করেছে বানভাসি মানুষ। তবে বন্যাদুর্গতদের সকল প্রকার সাহায্যের আশ^াস দিয়েছে জেলা প্রশাসন।


গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে সাতক্ষীরার উপকুলীয় এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩০টি পয়েন্টে সাড়ে ৫৭ কিলোমিটার বেঁড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলায়। ওই সময় বেশকিছু স্থানে রিং বাধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করা হলেও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলা ও কুড়িকাউনিয়া এবং শ্রীউলা ইউনয়নের হাজরাখালী পয়েন্টে বেঁড়িবাধ ভেঙে এতই গভীর হয়ে যায় যা সংস্কার করা এতদিন সম্ভব হয়নি। এর ফলে গত তিন মাস ধরে ওই এলাকার লোকালয়ে চলে জোয়ার-ভাটা। তার উপর বর্তমান অমাবশ্যার গোনে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গত ২/৩ দিনের জোয়ারে ও প্রবল বর্ষনে যে সমস্ত এলাকায় রিংবাধ দিয়ে পানি বন্ধ করা হয়েছিল সেগুলো আবারো ছুটে যায়। এর ফলে জোয়ার-ভাটা বইছে লোকালয়ে ও বাড়ির উঠানে।

মানবেতর জীবন যাপন করছে লক্ষাধিক মানুষ। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। দূর্গত এলাকায় ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। এতে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে দূর্গতরা। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব। অনেকেই এখন বাড়িঘর ছেড়ে শহরের দিকে ছুটছেন।


সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, ইতিমধ্যে দূর্গতদের জন্য ২০০ মেট্রিকটন চাউল ও নগদ ২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো জানান, দুর্গত এলাকায় বেঁড়িবাধ সংস্কারে দ্রত কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হবে।