সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কি অনন্তকাল চলবে: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক
আদালতের তলবে হাজির হওয়া সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের অতিরিক্ত ডিআইজি খন্দকার শফিকুল আলমকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, দীর্ঘ সাত বছরেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে?
গতককাল সোমবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শফিকুল আলমের উদ্দেশে এসব প্রশ্ন তোলেন। পরে আদালত এ মামলায় সন্দেহভাজন আসামি তানভীর রহমানের মামলা বাতিল আবেদনের ওপর আদেশের জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।
আদালতে আসামি তানভীরের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
আদালতের তলব আদেশে হাজির হয়ে মামলার তদন্তের বিষয়ে খন্দকার শফিকুল আলম হাইকোর্টকে জানান, এ মামলায় এখনও কোনও ক্লু খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডিএনএ টেস্টের চারটি নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুটি নমুনা এসেছে। এসব নমুনার সঙ্গে আসামিদের কারও কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। অন্য দুটি নমুনা পরীক্ষার জন্য এফবিআইতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এই নমুনা দুটির বিষয়ে এখনও কোনও অগ্রগতি নেই।
এ সময় আদালত বলেন, ‘আপনারা আলামত হিসেবে কী পেয়েছেন?’ জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা কয়েকটি ছোরা, দা, বঁটি পেয়েছি। তবে রিপোর্ট না আসায় কারও সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি।’ আসামি তানভীরের আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ আদালতকে বলেন, ‘এ মামলায় এপর্যন্ত সাত জন তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু মামলার কোনও পরিবর্তন ঘটেনি।’ এর এক পর্যায়ে আদালত হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘দীর্ঘ সাত বছরেও মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হবে কবে? তদন্ত কি অনন্তকাল ধরে চলবে?’

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি। পরের দিন ভোরে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে, গত ১ অক্টোবর এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ৬৮ বারের মতো পেছানো হয়। পুনরায় প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর নতুন দিন ধার্য করা হয়। ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাস নতুন এ দিন ধার্য করেন। তবে দীর্ঘ সাত বছরেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় মামলাটি বাতিল চেয়ে আসামি তানভীর হাইকোর্টে আবেদন জানায়। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করলেন হাইকোর্ট।