সাংবাদিকদের রক্ত মিছিলের শেষ কোথায় বছর যায় যুগ যায় প্রশাসন যায় প্রশাসন আসে বিচারের বাণী নিরবে নিভৃতে কাঁদে

ক্রাইম রিপোর্টার,(উৎপল ঘোষ), যশোর ঃ কি অপরাধ ছিলো ঢাকার সাগর রুমি জুটির?একই সঙ্গে বেড়ে উঠা দু’টি টগবগে উদীয়মান তরুণ – তরুণী এটি এন টেলিভিশনে সাংবাদিকতা পেশায় আসাই কী ছিলো তাদের অপরাধ? তারা তো কোনো অপরাধ করিনি। তারাতো বাচঁতে চেয়েছিল। নব এই যুগলের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে দিয়েছে পাষণ্ড ঘাতকেরা চারটি বছর অতিক্রম হয়ে গেল। ঘাতকদের বিচারের আলোর মুখ আজও দেখতে পেল না পরিবারের সতীর্থ সহ দেশবাসী। কবে হবে এর বিচার? না কী ফাইল আলমারিতে বন্দি হয়ে গেছে। মা বাবা হারা কোলের অবুজ সন্তানটি কী তার মা – বাবার খুনের বিচার পাবে না? দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল সহ বিভিন্ন জনপদে একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটেই চলেছে আজও। যার কোনো প্রতিকারও নেই। কোর্টের বারান্দায় শুধু বিচারের বাণীগুলো নিরবে নিভৃতে কাদঁছে। এসব হত্যাকান্ডের কোন সুষ্ঠ বিচার বা অপরাধীরা মৃত্যুদন্ড বা সাজা না পাওয়ার কারণে দেশে পেশাদারী কিলাররা খুনের পরে খুন করে চলেছে। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের হৃদয়ে আজও রক্তক্ষরণ হলেও সরকার – প্রশাসনের কোন জবাবদিহিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। চুনো পুঠিদের ক্রস ফায়ারে দিলেও রাঘব বোয়াল বা গডফাদাররা রয়েই গেছে ধরা – ছোঁয়ার বাইরে। ফলে তারা এখনো সমাজের উচু পর্যায়ে থেকে সন্ত্রাসীদের জড়ো করে চালিয়ে যাচ্ছে খুনের ঘটনা।
সুত্র মতে, দক্ষিণঞ্চলে প্রায় পাঁচশতাধিক দক্ষ ও পেশাদার বোমাবাজ রয়েছে এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এদের অনেককেই এখনো র‍্যাব – পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারিনি। আবার বেশ কিছু গ্রেফতার করার পরও আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে তারা বেরিয়ে এসেছে। বতর্মানে র‍্যাব পুলিশের অভিযান ঝিমিয়ে পড়ায় বোমাবাজ সন্ত্রাসীরা আবার এলাকায় ফিরে এসে পূর্বের ন্যয় কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারে বলে বিজ্ঞ মহল ধারণা করছে।সন্ত্রাসীদের মধ্যে কয়েকজন নিহত হয়েছেন এবং কয়েকজন জেল হাজতে আছে। তবে বেশ কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসী ও বোমাবাজ ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। বিগত দিনে বেশ কিছু শীর্ষ সন্ত্রাসী বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হলেও তাদের অস্ত্র পযর্ন্ত এখনো অরক্ষিত রয়েছে।
২১ বছর পার হয়ে গেল যশোরের প্রয়াত দৈনিক রানার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল’র হত্যার বিচার আজও শেষ হয়নি। তবে অচিরেই এ মামলার রায় পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর রফিকুল ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন খুব শীঘ্র এ মামলার আগুমেন্ট শুরু হবে। মামলার সুত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে শহরের বেজপাড়া ভবনে নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চার খাম্বার মোড়ে দূবৃত্তদের বোমা নিহত হন।পরের দিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন কারোর নাম উল্লেখ না করে যশোর কোতয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের তৎকালীন এ এস পি দুলাল উদ্দিন ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম সহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জসিট দাখিল করেন। এরপর মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেয়া হয় ।দীর্ঘদিন পর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ থেকে মুকুল হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই বছরের সি আই ডি কর্মকর্তা নতুন দুই জনের অন্তভূক্ত করে আদালতে সম্পুরক চার্জসিট জমা দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জর্জ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে সাইফুল আলম মুকুল হত্যার চার্জ গঠন করা হয়। ঐ সময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রুপম নামে আর এক আসামিকে অব্যহতি দেয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জর্জ ২য় আদালতে। আদালত সুত্রে জানা যায়, ন্দ্রুত মুকুল হত্যার বিচার পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
যশোরের অকুতোভয় কলম যোদ্ধা শহীদ সাংবাদিক দৈনিক জনকন্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি শামছুর রহমান কেবলকে ২০০০ সালের ১৬ জুলাই ঘাতকেরা জীবন কেড়ে নিয়েছে।এবারের স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্ঠা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
খুলনা জেলার আর এক লড়াকু কলম সৈনিক মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পযর্ন্ত সাংবাদিক মানিক সাহা খুলনার একুশে টেলিভিশন, বিবিসি, দৈনিক সংবাদ ও নিউজ পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি বুধবার বাড়ি ফেরার সময় প্রেসক্লাবের অনতিদূরে বামপন্থীদের বোমা হামলায় নিহত হন। ২০০৯ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত মানিক সাহা ছাত্র জীবন থেকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। ২০১৬ সালে এ হত্যা মামলায় ৯ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে খুলনা বিচার
আদালত।
৯০ দশকে সাতক্ষীরা দৈনিক পত্রদূত পত্রিকার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সম আলাউদ্দিনকে প্রেসক্লাব ও সদর থানার অনতিদদূরে গুলি করে হত্যা করে দূবৃত্তরা পালিয়ে যায়।১৯৯২ সালে দৈনিক স্ফুলিঙ্গ পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার আব্দুল গফ্ফার, ও ১৯৯৬ সালে দৈনিক লোক সমাজের রফিকুল ইসলাম, দৈনিক পত্র দূত পত্রিকার কালিগঞ্জ থানা ও প্রেস ক্লাবের সভাপতি খন্দকার রেজাউল করিম, ১৯৯৮ সালে চুয়াডাঙ্গার দিন বদল ষ্টাফ রিপোর্টার, ২০০০ সালে দৈনিক বীরদর্পন পত্রিকার সম্পাদক মীর ইলিয়াস ও দীলিপ, ২০০১ দৈনিক অনির্বাণ পত্রিকার ডুমুরিয়া থানা প্রতিনিধি এস এম মহর আলী, ২০০২ সালে দৈনিক পূর্বাঞ্চলের খুলনার প্রতিনিধি হারুন – রশিদ একই বছরে দৈনিক জন্মভুমি পত্রিকার সম্পাদক হুমায়ূন কবির (,বালু), ২০০৫ সালে খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপতি শেখ বেলালকে, দৈনিক সমকাল পত্রিকার ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান গৌতম, যশোরের দৈনিক রানার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক গোলাম মাজেদ ওবিক্রম মাহাবুব ইসলাম, ২০০৪ সালে ১লা জানুয়ারি ছায়াপথ পত্রিকার ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি সাংবাদিক উৎপল ঘোষের উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা, ২০১৩ সালে ২৮ মার্চ প্রথম আলোর পত্রিকার অভয়নগর থানা প্রতিনিধি সাংবাদিক মাসুদ আলমকে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করে মারাত্মক জখম করে ফেলে রেখে চলে যায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে । সন্ত্রাসীরা এখনো বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার অভয়নগর থানা প্রতিনিধি মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা ওলিয়ার রহমানকে নওয়াপাড়া কলেজ রোডে সকালে বুলেটের আঘাতে জীবন কেড়ে নেয় দূবৃত্তরা দৈনিক যুগের আলো ষ্ঠাফ রিপোর্টার মশিউর রহমান উৎসকে ২০১৫ সালে ২৩ ডিসেম্বর গাছের সাথে বেঁধে হত্যা করে। সাংবাদিক জামালের জীবন কেড়ে নিয়েছে পাষণ্ড ঘাতকেরা। জামাল হত্যার প্রধান আসামি রাজু মল্লিককে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
সম্প্রতি দেশে অভিযান ঝিমিয়ে পড়ার কারনে বেশ কিছু সাংবাদিকদের উপর আবার টার্গেট করা শুরু করেছে পেশাদার সন্ত্রাসীরা। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সাংবাদিকের উপর হামলা চালিয়ে পঙ্গু করেছে ঘাতকরা। অতি সম্প্রতি সাতক্ষীরায় মধ্যযুগীয় বর্বর সাংবাদিকেদর উপর হামলার ঘটনায় গোটা সাংবাদিক সমাজ আহত। সেই বেদনায় ক্ষত শুকাতেই সাতক্ষীরা শ্যামনগর থানার দৈনিক কালের চিত্রের প্রতিনিধি রাশিদুলকে মাদক ব্যবসায়ীরা বেদম মারপিঠ করে রক্তাক্ত জখম করে ও আহত রাশিদুলের নাকের হাড় ভেঙ্গে যায়। খোরেরা তার কাছ থেকে নগদ ১৭ হাজার টাকা মূল্যের ১ টি মোবাইল ও ২৫ হাজার টাকার ১ টি ক্যামেরা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় মামলায় হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ জামালপুরের দৈনিক পল্লী কন্ঠের পত্রিকার ষ্টাফ রিপোর্টার শেলু আকন্দের উপর হামলা চালিয়ে দুই পা ভেঙ্গে দিয়েছে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। জামাল পুরের কালের কন্ঠের সাংবাদিক মোস্তফা মনজুর উপর হামলা ও মারপিটের ঘটনায় ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রাকিব খানকে আটক করেছে পুলিশ। ১২ ডিসেম্বর ১৯ খুলনা সি আই এন টেলিভিশনের সাংবাদিক পলকের উপর হামলা করে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা।ব্রাক্ষনবাড়িয়ার সাংবাদিক বিজনকে হত্যার হুমকি দিয়েছে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। ২৫ ডিসেম্বর ১৯ যশোর কেশবপুর থানা প্রতিনিধি গৌতমকেও হত্যার হুমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় কেশবপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। যার নং – ৯০২। সর্বশেষ ৫ ই জানুয়ারি ২০ বেলা প্রায় ১২ টার সময় একাত্তর টেলিভিশনের খুলনা ব্যুরো প্রধান সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন পান্নুর উপর হামলা ক্যামেরা পারসন আরিফ হোসেন সোহেলের ক্যামেরা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। দিন বদলের সাথে সাথে রন্দ্রে রন্দ্রে পৌঁছে গেছে মাদক। যুব শ্রেণির নৈতিক অবক্ষয় তলানীতে। হাতে গুনা ৫/৭টি মামলার বিচার হয়েছে। বাকী মামলার বিচারের আলোর মুখ দেখতে পেল না। বিচার কার্য চলছে ধীরগতিতে।
বিগত দিনে দেশের দক্ষিণ – পশ্চিম অঞ্চলের সাংবাদিকদের ভাগ্যাকাশে বিরাজ করছে মহা দূর্যোগের ঘন কালো মেঘ। একের পর এক সাহসী কলম যোদ্ধা ঘাতকের হাতে প্রাণ হারিয়েছে। তখন আইন প্রয়োগকারী সকল সংস্থা সাংবাদিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিল। সংগত কারনে সে সময় জয় হয়েছিল সন্ত্রাস বাদদের। তখন সাংবাদিকদের জীবন আটকে যায় সন্ত্রাসের কাছে। বিভিন্ন জনপদে সন্ত্রাসীদের হুমকি পেয়ে সাংবাদিকরা প্রশাসনের গোচরীভৃত হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। তবুও থেমে নেই সত্যশ্রয়ীদের কলম। সাংবাদিক -দের জীবন থাকে সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ। সাংবাদিকরা ও তাদের স্বজনেরা প্রতিনিয়ত থাকেন শংকাগ্রস্থ। স্ত্রী ও সন্তানেরা সব সময় আতঙ্কের মধ্যেই জীবন – যাপন করে। স্বামীর কখন কী হয়।
তাই সতীর্থরা লিখেছিলেন,” নিদারুণ আকুতি ভরা স্মৃতি চারণমূলক প্রাণ ছোঁয়া প্রবন্ধ প্রাণ ভিক্ষা চাই ” শিরোনামে এ লজ্জ কেবল জাতির জন্য নয়। বিশ্ব বিবেকরাও যে সকল সাংবাদিকরা আহত পঙ্গু ও নিহত হয়েছেন তারা প্রত্যেকে ছিলেন তেজস্বয়ী কর্তব্য ও ন্যায় পরায়ন। নিহত সাংবাদিকদের পরিবারকে সরকার পৃষ্ঠপোষকতা করা দরকার। তাতে দেশের ক্ষতি হবে না বরং বহি বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল হবে। সাংবাদিকরা সমাজের আলোর দিশারী এ কথা সবার মনে রাখতে হবে।দেশে এখনো অনেক সাংবাদিক রয়েছেন যারা অন্যায়ের কাছে মাথা নত করে না কিংবা টাকার পেছনে দৌড়ায় না। তারা চায় সমাজের শাস্তি।অবহেলিত জনপদের চিত্র ও অবৈধ নিয়োগে ঘুষ বানিজ্য,টেন্ডারবাজি, বিভিন্ন প্রকল্পের ঘাপলার চিত্র ধরাই কী মিডিয়ার অপরাধ।
জাতির অস্তিত্বের সংকটে নিপতিত হবে। তাদের রক্তে সিক্ত করছে স্বাধীন সর্বভৌম জনপদ। তাদের স্বজনদের চাপা ও ব্যথা কার্যত পরিণত হয়েছে প্রেতপুরীতে। এতে বিশ্ব বিবেকেও করছে বিচলিত ও স্তম্ভিত। সকল রক্ত চক্ষুর ভয় হুমকির তোয়াক্কা না করে তেজদীপ্ত বিবেচিত সৈনিকের মত কলম সৈনিকেরা সত্যের পথে নিরলস বিরামহীন ভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। দূর্নীতি সন্ত্রাসের সাথে আপোষ না করে অনেক দেশ ও জাতির জন্য উৎসর্গ করেছেন স্বীয় জীবন। সমাজের এক শ্রেণীর মুখোষধারী আমলা ও ভদ্রবেশী অপশক্তিগুলো কলম সৈনিকদের খোঁচায় পশুমনোবৃত্তকে সন্ত্রাস লেলিয়ে হত্যা ও আহত করেছেন। একজন সাংবাদিকের প্রয়াস থাকে স্বাধীকের চেতনায় জাতিকে উব্দুদ্ধ করা ও তাদের চিন্তা চেতনার প্রতিফলন ঘটিয়ে নুন্যতম উপকার করা। এতে তারা পান আত্মতৃপ্তি। তাদের কাছে প্রতীয়মান এটাই স্বার্থকতা। তাদের থাকে না পাওয়ার প্রত্যাশা।
স্বাধীনতা যুদ্ধ সহ সকল মুহুর্তে সাংবাদিকদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। ঘাতকরা ভেবেছিল কলম রুখতে পারলে সন্ত্রাস দূর্নীতি অত্যাচারের একক রাজত্ব কায়েম করতে পারবে। কিন্তুু না? তাদের ক্ষুরধার কলম চলছে এবং চলবে। জগতে মিথ্যার বিরুদ্ধে সত্যের যুদ্ধ যুগ যুগ চলে আসছে এবং চলবেই। যশোরের আঞ্চলিক পত্রিকার সম্পাদক শহীদ সাইফুল আলম মুকুল লিখেছিলেন ” ভবের উচ্চকন্ঠ সত্য নির্বাক, সততা নির্বাসনে যাও। এদেশ তোমার নয়।” অন্যস্থানে তিনি লিখেছিলেন, ‘ পিতা দোহাই বললেই বিপদ ‘।আবার লেখনির মাধ্যমে সংবাদ পত্রে প্রকাশ হলেই প্রতিবেদকের বিপদ। তুমি বাঁচতে পারনি। পশুর দাপটে রাজত্বে মনুষ্যত্ব অচল। মানুষের অবয়বে পশুরা মুর্তিমান। দিশেহারা অপশক্তি বর্ণচোরাগংরা প্রায় তিন কেড়ে নিয়েছে জাতির হিতাকাংখী বর্ষীয়ান সাংবাদিকদের। এখনো সেই সমস্ত পেশাদারী কিলারগং রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। কারারুদ্ধ আহত, নির্যাতন ও হয়রানীর শিকার হয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক সাংবাদিক। এ পর্যন্ত কোন হত্যাকাণ্ডের আশানুরুপ ন্যায় বিচার পাওয়া যায়নি। অতীব দুঃখের বিষয় একের পর এক দেশ হিতৈষীর তাজা রক্তে কলঙ্কিত হচ্ছে জাতি। এ সব পেশাদার খুনী বোমাবাজ, অস্ত্রবাজ বা ভাড়াটিয়া কিলার হিসেবে যারা কাজ করে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা না করলে শুধু খুলনা অঞ্চলের ন্যয় সারা দেশে একের পর এক খুনের ঘটনা চলতেই থাকবে।