সরকারের কাছে ৪ দাবি জানাল হেফাজত

চলমান সংকট নিরসনে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। শনিবার বিকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ওলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে এ দাবি জানান হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী।

হেফাজতের নায়েবে আমির আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বক্তব্য দেন হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী।

চার দফা দাবিগুলো হলো:

এক. আল্লাহ ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, কুরআন-সুন্নাহ তথা ইসলাম অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে মহান জাতীয় সংসদে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আইন পাশ করতে হবে।

দুই. কাদিয়ানি সম্প্রদায় (আহমদিয়া জামাত) কুরআন-হাদিস-ইজমা-কিয়াস ও সারা বিশ্বের ওলামা-মাশায়েখ এবং মুফতিদের সর্বসম্মত ফতোয়া মোতাবেক কাফের। তারা মুসলমান না হয়েও মুসলমানদের লেবাসে সরলপ্রাণ মুসলমানদেরকে ঈমানহারা করছে। দেশে তাদের ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারণার মাধ্যমে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে অরাজক পরিস্থিতি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্র এবং চক্রান্ত করছে। সুতরাং কাদিয়ানিদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের যাবতীয় অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

তিন. বিভিন্ন মামলায় এখন পর্যন্ত অনেক নেতাকর্মী, আলেম-ওলামা কারাগারে আটক আছেন। কারাগারে থাকা আলেম-ওলামা ও হেফাজতের নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।

চার. বাংলাদেশের সংবিধানে মীমাংসিত ও অপরিবর্তনশীল বিষয় ‘রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম’-কে কটাক্ষ করে কতিপয় দায়িত্বশীলদের কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্যে ক্ষোভ এবং ঘৃণা প্রকাশ করে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সম্মেলনে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, ইসলামকে হেফাজতের লক্ষ্যে ২০১০ সালে মাওলানা আহমদ শফির হাত ধরে হেফাজতে ইসলামের জন্ম। প্রতিষ্ঠার পর নানা ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করেও ১৩ দফায় অটল রয়েছে হেফাজত। এর বাইরে হেফাজতের কোনো কর্মকাণ্ড নেই। কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা নামানো হেফাজতে ইসলামের কাজ নয়। জাতীয় নির্বাচন তো দূরের কথা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও হেফাজতের কোনো প্রার্থী নেই।

তিনি আরও বলেন, কিছু দিন আগে যে কারণেই হোক দেশে হেফাজতের ডাকে হারতাল পালিত হয়েছে। এ হরতালকে কেন্দ্র করে কিছু দুর্ঘটনা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ ছাত্রদের মাঝে কিছু বিশৃঙ্খলাকারী অনুপ্রবেশ করে জ্বালাও-পোড়াও এবং ভাঙচুর করেছে। মাদ্রাসার ছাত্ররা কখনোই এর সঙ্গে যুক্ত ছিল না। মাদ্রাসায় কারো জানমালের ক্ষতির শিক্ষা দেওয়া হয় না। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ আলেম-ওলামাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হেফাজত তাদের মুক্তি চায়।