সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে মিলন

আল-আমিন শেখ, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি:
একটি দুর্ঘটনা ভুক্তভোগী পরিবারের জন্য সারা জীবনের কান্না। উপার্জনক্ষম যে ছেলেটি পরিবারের হাল ধরেছিল, মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার কারণে সেই পরিবারে আজ অন্ধকার নেমে এসেছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে প্রিমিয়ার কোম্পানির কাভার্ডভ্যান চালকের ভুলের কারণে পঙ্গুত্ব বরণ করা মিলনের।

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রিমিয়ার কোম্পানির কারণে মিলন পা হারিয়ে চিকিৎসার টাকার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে। চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে শেষ সম্বল বসবাসের ঘরটিও বিক্রি করে দিতে হয়েছে। মিলনের পরিবারটি তাদের আত্মীয়-স্বজন পাড়া-প্রতিবেশি ও বিভিন্ন জায়গা থেকে ধার করে চিকিৎসা বাবদ এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কারণে মিলনের বাম পা কেটে ফেলা হয়েছে, ডান পায়েও পঁচন ধরেছে। মিলনের চিকিৎসার জন্য আরো প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার প্রয়োজন।

ঘটনার বিবরণ, প্রত্যক্ষদর্শী ও মিলনের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড এনায়েতপুর এলাকার বাসিন্দা মো: মিজানের ছেলে মাইক্রোবাস চালক মিলন (২৩) পেশাগত কারণে গত ১৭ জুলাই সকালে ঢাকা থেকে মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো চ ৫৩-০৮০৬) গাড়িটি চালিয়ে টাঙ্গাইল যাচ্ছিলেন। যাওয়ার সময় ঢাকার আশুলিয়া থানার ১নং শিমুলিয়া ইউনিয়নের কবিরপুর ইউরো আর্ট এ্যাপরোলস লিমিটেড (কোরিয়ান গার্মেন্টস) এর সামনে টাঙ্গাইলগামী লেনে তার চালিত গাড়িটি হঠাৎ রাস্তায় নষ্ট হয়ে যায়।

চালক মিলন রাস্তা থেকে গাড়িটি সরানোর জন্য লোকজন ডাকতে রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় একইদিকগামী প্রিমিয়ার সিমেন্ট কোম্পানির একটি কাভার্ড ভ্যান (ঢাকা মেট্রো উ ১১-২৭১৮) এর চালক সুমন দ্রুত বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে মিলনকে সজোরে ধাক্কা দেয়। বাম পায়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত মিলনকে আহত মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসার জন্য স্থানীয় লোকজন নিকটস্থ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজি হাসপাতালে নিয়ে যায়।

দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে সালনা হাইওয়ে থানার এসআই মো: আবু তালেব ভূঁইয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মাইক্রোবাস ও প্রিমিয়ার সিমেন্ট কোম্পানির কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করে থানা হেফাজতে নেয়। এ ব্যাপারে মিলনের পরিবারের পক্ষ থেকে তার চাচা মো: আমিনুল ইসলাম ঢাকা আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। টাঙ্গাইল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাইক্রোবাস চালক মিলন সড়ক দুর্ঘটনায় পা হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করে চিকিৎসার টাকার অভাবে দুঃসহ জীবন যাপন করছে। মিলনের বাবা মিজান ও দাদা মো: আব্দুল আজিজের অভিযোগ, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ি প্রিমিয়ার সিমেন্ট কোম্পানির কাভার্ডভ্যান চালক সুমন ও কোম্পানীর কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার বাবদ সহযোগিতা তো দূরের কথা, কোন খোঁজ-খবর পর্যন্ত নেয়নি। মিলনের পরিবার এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করছেন।