সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানদের মন্ত্রীর মর্যাদা?

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংসদীয় গণতন্ত্রের ধারায় সংসদকে শক্তিশালী করতে চায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সরকার এবং মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো সত্যিকার অর্থে সংসদে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চায়। এজন্য সংসদীয় কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করা, সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানদের মর্যাদা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘সংসদীয় গণতন্ত্রে সংসদই হবে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু। বিগত দিনগুলোতে সংসদকে আমরা কার্যকর করেছি, কিন্তু ক্ষমতাবান করতে পারিনি। নির্বাহী বিভাগকে সংসদের কাছে জবাবদিহি করার ক্ষেত্রে এখনো বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে।’ তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন সংসদকে সকল কাজের কেন্দ্রে আনতে চান।

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সংসদকে শক্তিশালী এবং ক্ষমতাবান করার লক্ষে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী। এরমধ্যে রয়েছে:

১. সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান পদে দলের সিনিয়র এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নিয়োগদান। সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান পদ মন্ত্রীর মর্যাদায় করা।

২. সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান পদে অন্তত কিছু কমিটিতে বিরোধি দল থেকে নিয়োগদান।

৩. সংসদীয় কমিটির বৈঠক নিয়মিত করা এবং তাতে মন্ত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।

৪. বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নীতি নির্ধারনী বিষয়গুলো সংসদাীয় কমিটিতে আলোচনা এবং চুলচেরা বিশ্লেষণ করা।

৫. মন্ত্রণালয়ের কাজ এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সংসদীয় কমিটির মন্ত্রণালয়ে নীরিক্ষা এবং পর্যবেক্ষনের ক্ষমতা।

প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ একজন আওয়ামী লীগের নেতা বলেছেন,‘সিনিয়র নেতাদের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার একটি বড় কারণ হলো, সংসদীয় কমিটি গুলোকে ক্ষমতাবান করা। মন্ত্রণালয়গুলোকে সংসদের জবাব দিহিতার আওতায় আনা।’ জানা গেছে, অন্যান্য সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশে সংসদের যে ক্ষমতা বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের এখনও সেই ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এবার প্রধানমন্ত্রী সার্বভৌম সংসদ করতে চান। একই সঙ্গে, বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করার লক্ষ্যে আবারও সংবিধান সংশোধন করতে চায় নতুন সরকার। এর আগে ৭২ এর সংবিধানের আদলে সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু সংবিধানের ঐ ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। হাইকোর্ট এবং সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ ঐ সংশোধনী বাতিল করে। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সঙ্গে এ নিয়ে সরকারের প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব এবং মতবিরোধ তৈরি হয়।

যদিও সরকার এ নিয়ে রিভিউ পিটিশান করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা শুনানী হয়নি। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, ষোড়শ সংশোধনীর ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো দূর করে, নতুন আঙ্গিকে আইনটি প্রণয়নের চিন্তা ভাবনা চলছে।

সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন, ‘এবার সংসদ হবে প্রাণবন্ত, কার্যকর এবং অর্থবহ। প্রশাসন এবং নির্বাহী বিভাগকে জনপ্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনাই হবে নতুন সংসদের প্রধান লক্ষ্য।’