শৈলকুপায় একটি বাড়ি নিয়ে গুজব, এলাকাবাসির মধ্যে করোনা আতংক

শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : একটি বাড়িতে বিয়ে এবং সেখানে ৭ থেকে ৮ ইতালী প্রবাসি অবস্থান করছেন। তার মধ্যে একজন অসুস্থ্য। এর থেকে ডালপালা গজিয়ে গুজবের পাহাড়। ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার কাঁচেরকোল। বাড়ির মালিক আব্দুল মজিদ মোল্লাও বিভিন্ন মহলে জবাব দিতে দিতে বিব্রত। এমনই একটি গুজবে কাঁচেরকোল বাজার সহ আশপাশ এলাকায় করোনা আতংক ছড়িয়ে পরে এবং এলাকাবাসির দাবি বাড়িটি যেন প্রশাসন তাদের নিয়ন্ত্রনে রাখে। ঘটনার সত্যতা পেতে শনিবার সকালে কাঁচেরকোল বাজারের চায়ের দোকানদার মুনির জানান তার বাড়ি খন্দকবাড়িয়া গ্রামে। তিনি শুনেছেন কাচেরকোল গ্রামের মজিদ মোল্যা তার ছেলে মেয়ে সহ গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে এসেছেন। সবাই ইতালীতে থাকে। শুক্রবার তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান পুলিশ বন্ধ করেছে। এ নিয়েতো এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। কখন জানি কি হয়। তারা ভয়ের মধ্যে আছেন। বাজারের অটো রিক্সার স্টাটার কাচেরকোল গ্রামের সোহেল জানান, তিনিও শুনেছেন মজিদ মোল্যা তার ছেলে মেয়েদের নিয়ে ইতালী থেকে বাড়ি এসেছেন মেয়ের বিয়ের দিতে। তারমধ্যে একজন অসুস্থ্য। ঢাকা থেকে মোবাইলে কাঁচেরকোল গ্রামের কাজী সুজন জানান তিনি শুনেছেন তাদের গ্রামের একটি বাড়িতে ৭ থেকে ৮ ইতাালী প্রবাসি অবস্থান করছেন। ভাই আপানারা একটু দেখেন। সবারই একই অভিযোগ।

তবে গুজবের এ ঘটনায় সরেজমিনে মজিদ মোল্যার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় উল্টো চিত্র। গুজবে বাড়িতে নেমে এসেছে শুনশান নিরবতা। ডাকলেই বেড়িয়ে আসলেন মজিদ মোল্যা। পরিচয় দিয়ে ঘটনাটি জানতে চাইলে তিনি জানান তার ছেলে রনি মোল্যা স্বপরিবারে ইটালী বসবাস করেন। কয়েকমাস আগে তিনি ও তার স্ত্রী ছেলের কাছে বেড়াতে যান। জানুয়ারীর ১৭ তারিখে মজিদ মোল্যা ও তার স্ত্রী দেশে ফিরে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। এর মাঝে তার ছোট মেয়ে মাহাফুজা উম্মে মজিদের বিয়ের সম্মন্ধ ঠিক হয়। সে ঢাকার একটি বেসরকারী বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষ করেছে। গত শুক্রবার এ বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তার বড় মেয়ে মাহাবুবা উম্মে মজিদ জার্মানির ফ্রাংকফুট থেকে এবং মেজো মেয়ে মারজিয়া উম্মে মজিদ লন্ডন থেকে চলতি মাসের ১২ তারিখে বিমান বন্দরে নামে। তারপর থেকে জামাই মেয়ে ও তাদের সন্তান সহ ৬ ব্যক্তি তার কাছে অবস্থান করছেন এবং সরকারী নির্দেশনা মেনে চলছেন। নিজেদের নিরাপত্তার কারনেই বাড়ির বাইরে তারা যায়না। ছেলে রনি মোল্যা এখনো ইটালীতে অবস্থান করছেন। তার বাড়িতে ইতালী থেকে কোন ব্যক্তি আসেনি। সব আয়োজনের পরও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি ছোট মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান পারিবারিক ভাবে সম্পন্ন করেছেন। গুজবের পর যা স্থানীয় পুলিশ ফারীর সদস্যরা পর্যবেক্ষন করেন। দেশের এ সংকটে এলাকায় তাদের নিয়ে এ ধরনের গুজবে তিনি ও তার সন্তানরা বিব্রত বোধ করছেন বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

কচুয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ওসি পিয়ার আলী জানান কাঁচেরকোল গ্রামের মজিদ মোল্যার বাড়িতে কোন ইটালী প্রবাসি অবস্থান করছেন না। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তার মেয়ে জামাই জার্মানি ও ইংল্যান্ড থেকে এসেছে। সাথে ৩টি শিশু রয়েছে। তারা বিমান বন্দরে নামার পর সরকারী নির্দেশনা মেনে বাড়িতে অবস্থান করছেন। তার ছোট মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় কিছু গুজব তারাও শুনেছেন। যাচাই বাছাই করে দেখা গেছে তার কোন সত্যতা নেই। তারা পুলিশ সুপারের নির্দেশে করোনা ভাইরাস নিয়ে এলাকায় জনসচেতনতা মুলক মাইকিং শুরু করেছেন বলে জানান।