মনোয়ার বাবু, (ঘোড়াঘাট) দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট থানার ৯৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা হালিমা খাতুনের শেষ ইচ্ছা একটি হুইল চেয়ার সেই ইচ্ছাও পূরণ করলেন ওসি আজিম উদ্দিন এবং সেই সাথে পেল প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড। বৃদ্ধা হালিমা খাতুন ঘোড়াঘাট উপজেলা ১নং ইউপির বুলাকী পুর সৌলা গ্রামের মৃত- রজ্জব আলীর স্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) ওসি আজিম উদ্দিন চলাচলের সুবিধার্থে হুইল চেয়ার কিনে নিজে বৃদ্ধা হালিমা খাতুনের বাসায় উপস্থিত হয়ে তাকে এই উপহার টি প্রদান করেন।এসময় ইউএনও রাফেউল আলম এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা বৃদ্ধা কে একটি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডও উপহার দেন। এর আগে স্বজনের কাছে অনেকটা বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ৯৫ বছরের শারীরিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধা হালিমা খাতুন। দীর্ঘদিন ধরে স্বজনদের ঘরে মানবেতর জীবন কাটাতে হয় তাকে।
এদিকে গত ২৮ মার্চ রাত আনুমানিক ২:০০ টার সময় স্বজনরা যখন চলাফেরা করতে না পারা বৃদ্ধা কে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়, সেই সময় ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পান পুলিশ কর্মকর্তা ওসি আজিম উদ্দিন।তৎক্ষণাৎ ওসি বৃদ্ধা কে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান এবং তার কাছে সবকিছু শোনার পর তার সার্বিক দ্বায়িত্ব নেন নিজেই।
পরে ওসি আজিম উদ্দিনের চেষ্টায় সাংসদ শিবলী সাদিক( দিনাজপুর -৬),ইউএনও রাফেউল আলম এবং ৩নং ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান এর কাছে বৃদ্ধার জন্য সহযোগীতা চাইলে তাঁরা নগদ অর্থ,একটি বাড়ি,প্রতিবন্ধি ভাতা এবং প্রতি মাসের জন্য খাবার চালের ব্যবস্তা করে দেন।আর এর পর থেকে হালিমা খাতুনের কদর বেড়েছে স্বজনের কাছেও। বৃদ্ধা বয়সে আদর আপ্যায়ন পেয়ে খুশি হালিমা খাতুন। আর নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছে স্বজনরা। এমন মানবিক উদ্যোগ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত বলে মনে করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহ সাধারণ জনগণ।
এসময় ঘোড়াঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ আজিম উদ্দিন বলেন, পৃথিবীতে কেউ কিছু নিয়ে আসেনি আর নিয়েও যাবেনা। এজন্য আসুন আমরা সমাজের অবহেলিত অসহায় মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। কোনো বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ যেনো এমন অবহেলায় না থাকে আমরা সেদিকে নজর রাখবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাইফেল আলম বলেন, দারিদ্র্য ও বয়সের ভারে যে মানুষগুলো পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে কোথাও ঠাঁই না পেয়ে অনাহার, অনিদ্রা ও ব্যাধিকে সঙ্গী করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, এমন ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি সকলকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেন।