লক্ষ্মীপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় অভিযোগের প্রসাশনিক তদন্ত শুরু

বিএম সাগর লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়ালের অনিয়ম রুখবেকে ? চেয়ারম্যানকে চাঁদা দিয়ে মেঘনা নদীর বিভিন্ন চরে মাছ শিকারের অনুমুতি নিতে হয় জেলেদের। মেঘনা নদীর প্রায় ১৫Ñ২০ টি স্থান জেলেদের কাছে ভাড়া দিয়ে বছরে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। টাকা না দিলে মাছ ধরার অনুমুতি মিলে না জেলেদের। কোন জেলে অনুমুতি না নিয়ে মাছ শিকার করতে ওই চরগুলোতে গেলে তাদের জাল এবং মাছ লুটসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে চেয়ারম্যান ও তাঁর অনুসারীরা। এ সব ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে চেয়ারম্যান ছৈয়াল ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয় এক জেলে। এছাড়াও ইউসুফ ছৈয়ালের এলাকায় ২০নং চর মোহন ইউনিয়নের অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তলন বাল্য বিবাহ দেওয়া সহ বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রশাসনকে তওয়াক্কা না করে দিনের পরদিন নির্ধিদায় চলছে তার এই সকল কার্যকরম।

সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দফতরে শাহজালাল মোল্লা নামে এক জেলে এ অভিযোগ করেন। এতে ইউসুফ ছৈয়ালসহ উলেখসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অভিযুক্ত অন্যরা হলেন, ইউসুফ ছৈয়ালের ছেলে ইয়াকুব ছৈয়াল, কাজল ছৈয়াল, তাদের অনুসারী জিল্লাল সর্দার, ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওযর্ডের সদস্য (মেম্বার) ফিরোজ আলম, আনু , সালাহ আহম্মদ, সাদ্দাম, ইলিয়াছ, এমরানসহ অজ্ঞাত ২৫ জন। অভিযোগকারী শাহজালাল একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওযর্ডের রহমান মোল্লার ছেলে ও পেশায় জেলে। অভিযোগে আরও উল্লেখ  করা হয়, সদর উপজেলার মেঘনা নদীর উত্তর চররমনী থেকে মেঘা পর্যন্ত ১৫-২০টি চরে প্রায় ৪০ জন জেলে গছি জাল দিয়ে মাছ শিকার করে আসছে। এরমধ্যে হোলার চর, দিঘলা চর, পাতার চর ও হটকের চর রয়েছে। কয়েক বছর ধরে ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ ছৈয়াল লোকজন দিয়ে জেলেদের কাছ থেকে প্রতিটি চরের জন্য ২ থেকে ৩ লাখ টাকা করে চাঁদা নিচ্ছেন। এবার দাবি করা চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় নদী থেকে জেলেদের জাল উঠিয়ে ফেলা হয়। মাছ ধরতে না দেওয়ায় জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে রয়েছে। চেয়ারম্যানের এ অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য তারা জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

ভুক্তভোগী জেলে শাহজালাল মোল্লা বলেন, ‘ইউসুফ ছৈয়াল গত বছর ৪ লাখ টাকা নিয়ে আমাদের নদীতে মাছ ধরতে দিয়েছে। এবার টাকা না দেওয়ায় আমাদের জাল ফেলে দিয়েছে। মাছ ধরতে দিচ্ছে না।’ জানতে চাইলে চররমনী মোহন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু ইউসুফ ছৈয়াল বলেন, ‘অভিযোগ করার বিষয়টি শুনেছি। প্রশাসন এটি তদন্ত করছে। আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ সঠিক নয়।’

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগটি পেয়েছি। কয়েকটি চর নিয়ে বিরোধ রয়েছে বলে শুনেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সহকারে তদন্ত চলছে।’