রাজবাড়ীতে সুন্দরভাবে চলছে স্বরস্বতী প্রতিমা তৈরীর কাজ

রুবেল চিশতী, রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রতিবছরের ন্যায় এবারও জ্ঞানের আলো ছড়াতে আসছেন দেবী মা সরস্বতী। আর তাই মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ততম সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কাজে। এখন চলছে বাঁশ, খড় ও কাঁদামাটি দিয়ে প্রতিমার অবকাঠামো তৈরি ও প্রলেপ দেওয়ার প্রাথমিক কাজ।

রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাজার ও পালপাড়াতে সরস্বতী প্রতিমার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এইসকল শিল্পীরা। প্রায় প্রতি বাড়িতেই সরস্বতী পুজা হওয়ায় চাহিদা রয়েছে প্রতিমার।

সরেজমিনে বালিয়াকান্দির উপজেলার কর পাড়ার মৃৎশিল্পী তাপস পাল ও খোকন পালের কারখানায় গিয়ে দেখা যায় চলছে ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের প্রতিমা তৈরির কাজ। মৃৎশিল্পীরা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন।

মৃৎশিল্পী তাপস পাল জানান, সামনে সরস্বতী পূজা উপলক্ষ্যে প্রতিমা বানাচ্ছি। সারা বছর বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করি। এবার বিভিন্ন সাইজের সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করেছি। কিছু বায়না নেওয়া থাকে ও কিছু প্রতিমা বানানো থাকে যাতে শেষ মুহুর্তে বায়না না দিয়েও যাতে কিনতে পারে৷

মৃৎশিল্পী খোকন পাল জানান, ঠাকুর তৈরি ও তার সাজসজ্জার যে কাঁচামাল তার দাম বেড়েছে। ফলে ঠাকুর তৈরির খরচ অনেকটাই বেড়েছে। ফলে যারা ঠাকুর আগে থেকে বায়না করছেন তারা অতিরিক্ত দাম দিতে রাজি নয়। তার উপর আছে বিক্রিতে ভাটা পড়ে তাই তারাও ঠাকুরের দাম বাড়াতে পারছেন না।

বালিয়াকান্দি মহাশ্মশান ও কেন্দ্রীয় মন্দিরে প্রতিমা বানাতে থাকা মৃৎশিল্পী সাধন পাল বলেন, শীতকে উপেক্ষা করে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি ও রং করায় ব্যস্ত সময় পার করছি আমরা। কাজের চাপে দম ফেলার নেই। এইবার ৩৩ টি প্রতিমা তৈরী করছেন যা সর্বনিম্ন ৫ শত টাকা থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবে বলেও জানান তিনি।

হিন্দুধর্ম মতে, বিদ্যার দেবী সরস্বতী। হিন্দু শিক্ষার্থীরা দেবীর আশীর্বাদ লাভের আশায় প্রতিবছর পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী দেবীর পূজা করে থাকেন। এ পূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে বাড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী মন্দির। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজা উদযাপনের লক্ষে শিক্ষার্থীদের মাঝে চলছে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা।

শিক্ষার্থী ইতি ভট্ট জানান, প্রতিবছরই তারা কাছে বিদ্যার জন্য প্রার্থনা করেন। এবারও তারা দেবীর কাছে বিদ্যা ও দেশ-জাতির মঙ্গল কামনা করে প্রার্থনা করবেন।

বালিয়াকান্দি মহাশ্মশান ও কেন্দ্রীয় মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ কুন্ডু চন্দন জানান, উপজেলা সদর ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বাসা-বাড়িতে স্বরসতী পূজা উদযাপিত হবে। আমরা আশা করছি কোনো ধরণের বাধা-বিপত্তি ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে জাকজমক পরিবেশে পূজা সম্পন্ন হবে। এছাড়াও স্থানীয় প্রশাসন আমাদের নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছে।