যশোর : ‘পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যুবলীগ নেতাকে গুলি করেছে’

যশোরে সংবাদদাতা : যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী, শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহবুব রহমান ম্যানসেল (৩২) গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত ম্যানসেলকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার বামপায়ের হাঁটুতে গুলি লেগেছে।

ম্যানসেলের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘পুলিশ বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে ম্যানসেলকে গুলি করেছে।’

পুলিশ বলছে, ‘দুদল সন্ত্রাসীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে ম্যানসেল গুলিবিদ্ধ হয়েছে।’

ম্যানসেল শহরের ষষ্ঠিতলা পাড়ার আলমাসের ছেলে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

কোতয়ালি থানার ওসি অপূর্ব হাসান জানান, ‘রবিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে শহরের ষষ্টিতলা পাড়ায় দুইদল সন্ত্রাসীর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। সেখান থেকে পায়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ম্যানসেলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তিনটি নাইন এম এম পিস্তল ও ১২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। ম্যানসেলের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় সোহেল ওরফে হাঁস সোহেল, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. ফিরোজ আহমেদের ছেলে অর্নব হত্যা মামলাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।’

আটকাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পায়ে গুলিবিদ্ধ যশোরের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা মেহবুব রহমান ম্যানসেল।

ম্যানসেলের স্ত্রী বৈশাখি রহমান তৃষা হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, ‘রবিবার রাত ২টা- আড়াইটার দিকে পুলিশ বাড়িতে হানা দেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ম্যানসেল বাড়ির ছাদে উঠে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় প্রতিবেশী শহর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হাসান ইমাম লালের বাড়ির ছাদে গেলে পুলিশ ম্যানসেলকে ধরে শটগান দিয়ে তার বামপায়ে গুলি করে। আহত অবস্থায় রাত সোয়া ৩টায় ম্যানসেলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ম্যানসেল আটকাবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’

উল্লেখ্য, এর আগে ২০০৮ সালে ম্যানসেলকে পুলিশ ডানপায়ে গুলি করে। এরপর সে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতো। কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে কখনো বেরিয়ে আসেনি। বরং তার পায়ে পুলিশ গুলি করার পর ম্যানসেল আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ২০১০ সালের দিকে তৎকালীন যশোর সদরের এমপি খালেদুর রহমান টিটোর হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করে। পরবর্তীতে যশোর সদর আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আওয়ামী লীগ নেতা কাজী নাবিল আহমেদ। ম্যানসেল কাজী নাবিল আহমেদের গ্রুপে যোগ দিয়ে তার ছত্রছায়ায় রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রায় দুই বছর আগে কাজী নাবিল আহমেদের আশীর্বাদধন্য হয়ে ম্যানসেল শহর যুবলীগের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়কের পদ লাভ করেন। তার এই পদবিধারী অবস্থানকে আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা ভালোভাবে নেয়নি।