ম্যান্ডেলার সহযোদ্ধা ইব্রাহিম ইসমাইল আর নেই

দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নেলসন ম্যান্ডেলার সহযোদ্ধা ইব্রাহিম ইসমাইল (৮৪) মারা গেছেন।

দেশটির শাসক দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) সোমবার এক বিবৃতি এ নেতার মৃত্যুর খবর জানিয়েছে। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা এ সংগ্রামীর নাম দেশটির সবার কাছে অতিপরিচিত। মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধীর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই সংগ্রামী মাত্র ১৩ বছর বয়সে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেন।

নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তিনি বছরের পর বছর রোবেন দ্বীপের কারাগারে কাটান।

বন্ধুমহলে পরিচিত ছিলেন ‘এবি’ নামে। সহযোদ্ধারা আদরের ডাকনামের আগে জুড়ে দিয়েছিলেন ‘কমরেড’। জন্ম বর্ণবৈষম্যে দীর্ণ ডারবানে, ১৯৩৭ সালের ১ জুলাই।

ছোটবেলা থেকেই দেখতেন, কীভাবে ‘কালা আদমিদের’ ওপরে নিপীড়ন চালান শ্বেতাঙ্গেরা। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইব্রাহিম ও তার আত্মীয়দেরও নানা হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে।

তখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়ানোর স্বাধীনতা ছিল না ভারতীয়দেরও। সেই আইন ভাঙার জন্য দুবার জেলে যেতে হয়েছিল ইব্রাহিমের বাবাকে। মাত্র ১৩ বছর বয়সে প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবি। বেছে নেন গান্ধীর দেখানো অহিংস রাজনীতির পথ।

তার কয়েক বছর পর থেকেই ইব্রাহিম এএনসিতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু দুটি কারণে তখন তাকে সদস্যপদ দেয়নি দল। প্রথমত তার বয়স। দ্বিতীয়ত এবির ভারতীয় পরিচয়। তখনও অ-আফ্রিকানকে সদস্য করত না এএনসি। অগত্যা তিনি যোগ দেন নেটাল ইন্ডিয়ান কংগ্রেসে।

১৯৬৩ সালে প্রথম জেল। কুখ্যাত রোবেন আইল্যান্ডে পাঠানো হয় ইব্রাহিমকে। সেই জেলে তার সঙ্গী ছিলেন নেলসন ম্যান্ডেলা ও জেকব জ়ুমা।

প্রথম দফায় ১৫ বছর জেলে ছিলেন ইব্রাহিম। হাজার কষ্টের মধ্যেও জেল থেকেই পড়াশোনা করতেন। বন্দিদশাতেই বিএ ও বিকম ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

১৯৭৮ সালে মুক্তির পর ফের সশস্ত্র সংগ্রামে যোগ দিয়েছিলেন। আবার বন্দি হন ১৯৮৬ সালে। এবারের ঠিকানাও সেই রোবেন আইল্যান্ড। মুক্তি পান ১৯৯১ সালে।