মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত বিস্তীর্ণ সরিষা ফুলের মাঠ: দুলছে কৃষকের হলুদ স্বপ্ন

নাদিম আহমেদ অনিক,বিশেষ প্রতিনিধি-
রাজশাহী বিভাগে অন্তগত শষ্য ভান্ডার খ্যাত উত্তরাঞ্চলের বৃহত্তর জেলা নওগাঁ। নানান ফসল উৎপাদনের জন্য যেন এক যাদুর উপনিবেশ এ জেলার মাটি। ইতমধ্যে চাল ও আমের রাজধানী হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছে এ জেলা।


পাশাপাশি নানান ফসল উৎপাদনে প্রথমেই অবস্থান করে এ জেলার সুনাম।

আর বর্তমান চিত্রে লক্ষণীয়, সরিষার হলুদ ফুলের সৌন্দর্যে জেলার বিস্তীর্ণ মাঠ। যত দূর চোখ যায়, কেবল হলুদ আর হলুদ। সরিষা গাছের সজ্জিত সমারোহে প্রকৃতি তার সৌন্দর্যের বুনন করছে। আর প্রতিটি ফুলে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জেলায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে সরিষা চাষের এমনই চিত্র দেখা গেছে। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। মৌমাছির গুনগুন শব্দে ভরপুর ক্ষেত-খামার।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী চলতি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ৩২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এক হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ হয়েছে।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো পাওয়া যাবে। আর বেশি কুয়াশা হলে সরিষাখেতের ক্ষতি হতে পারে। সরিষা জমিতে বপন করার পর থেকে তিন মাসের মতো সময় লাগে পরিপক্ব হতে। সরিষার বপনের পর ফুল আসে এক মাস পর। দেড় মাস পর ফুলে সরিষা ধরে।

নওগাঁ সদর উপজেলার শৈলগাছী ইউনিয়নের কৃষক আমির বলেন, আমি চার একর জমিতে সরিষা চাষ করছি। এখনও পর্যন্ত আবহাওয়া ভালো আছে। তাই সরিষার চাষও ভালো হয়েছে। বাজার যদি ভালো থাকে, ২ হাজার টাকা মণ বিক্রি করতে পারব।

রানীনগর উপজেলার কুনৌজ গ্রামের কৃষক বাচ্চু জানান, এবার দুই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন তিনি। তার সরিষা ক্ষেত খুবই ভালো হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার ক্ষেতে কোনো রোগবালাই দেখা দেয় নাই। আশা করছেন, এবার ভালো ফলন পাবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও এক হাজার ৫৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি পরিমাণ সরিষা চাষ হয়েছে।

ঠিক সময়ে জমি চাষযোগ্য হওয়ায় এলাকার কৃষকরা সুযোগ বুঝে সরিষা চাষ করেছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ক্ষতি না হলে জেলায় সরিষা আবাদে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।