মৌসুমের শেষ সময়ে সুন্দরবনে চলছে প্রথম ট্রিপের গোলপাতা আহরণ, লক্ষ্যমাত্র অর্জনে আশংকা

মোঃ মনিরুল ইসলাম, প্রাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধিঃ মৌসুমের শেষ সময়ের অনুমতিতে সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের একমাত্র কূপে চলছে গোলপাতা আহরণ উৎসব। বনবিভাগের কঠোর নিরাপত্তা আর কড়াকড়িতে পশ্চিম বিভাগের খুলনা রেঞ্জের একটি কূপে নির্বিঘ্রে প্রথম ট্রিপের গোলপাতা কাটতে পেরে বেশ খুশি বাওয়ালিরা। তবে বন বিভাগের বনজদ্রব্য আহরণ সঙ্কুচিত করার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি এবং গোলপাতার চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় আহরণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা করছেন বাওয়ালিরা। বন বিভাগ জানায়, বছরের ডিসেম্বরে শুরু হয় গোলপাতা আহরণ মৌসুম। তবে এবার ভরা মৌসুমে বাওয়ালিদের বিএলসি (পারমিট) দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর ছিল বন বিভাগ। সর্বশেষ প্রথম দফায় এক লাখ মণ গোলপাতা কাটার লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে খুলনা রেঞ্জের একটি কূপ থেকে আহরণের পারমিট দেয় বনবিভাগ। তার মধ্যে প্রথম দফায় বাওয়ালিরা গোলপাতা আহরণে ১৪৫টি বিএলসির অনুকূলে ৭০ হাজার ১২৮ মণ গোলপাতা সংগ্রহের পারমিট নিয়েছেন। গত ৩১ জানুয়ারি থেকে পারমিট দেয়া শুরু হয়েছে এবং আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত গোলপাতা আহরণ চলবে।

বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বাওয়ালিরা যাতে নির্বিঘেœ গোলপাতা কাটতে পারেন তার জন্য কূপের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তদারকি করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ না থাকায় গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশংকা করছেন বাওয়ালিদের পাশাপাশি খোদ বনবিভাগের কর্মকর্তারাও। খুলনার কয়রা উপজেলার সুতিরখালধার এলাকার বাওয়ালি নজরুল ইসলাম বলছিলেন, ২৫ বছর ধরে সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে আসছেন, কিন্তু বন বিভাগের এত কড়াকড়ি আগে কখনো দেখেননি তারা। কয়রার খুচরা গোলপাতা ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, এখন আর আগের মতো গোলপাতার চাহিদা নেই। বিক্রি কম হওয়ায় গেল বছরের গোলপাতা রয়ে গেছে অনেক খুচরা বিক্রেতার আড়তে। বাওয়ালিদের দাবি, গোলপাতা আহরণে যে পরিমাণ টাকা লগ্নি করা লাগে সেই তুলনায় একেবারেই ব্যবসা নেই।

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসীন হোসেন বলেন, তিনি প্রতিটি স্টেশন ও কূপে নিয়মিত তদারকি করে বিএলসি নবায়নের অনুমতি দিয়েছেন। পাশাপাশি কূপে নৌকার সাথে মিল রেখে গোলপাতা কাটার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।