মুজিব বর্ষের ঘর দেয়ার কথা বলে অসহায় নারীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

আমতলী (বরগুনা) থেকে মোঃ নজরুল ইসলাম

বরগুনার আমতলীতে অসহায়, এতিম, দুস্থ, বিধবা, গরীব, মানুষের আর্তনাদে যেন ভারী হয়ে উঠেছে আমতলীর কুকুয়া ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া, চুনাখালী গ্রাম। ভূক্তভোগীদের চোখের জলে কাঁদছে মানবিকতা। বাবা ডেকেও পাননি ঘর, ঘরের জন্য দেয়া টাকা ফেরতের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে মাসের পর মাস। সরেজমিনে দেখা যায়, বরগুনার আমতলীতে গৃহহীন ও দরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে মুজিব বর্ষের ঘর ও গভীর নলকূপ দেওয়ার নামে প্রায় ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চুনাখালি ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিনের বিরুদ্ধে। ঘর ও গভীর নলকূপ তো দিচ্ছেই না বরং টাকা ফেরত চাইলেই উল্টো মাসের পর মাস ঘুরাচ্ছে বিভিন্ন মানুষ দ্বারা হুমকি প্রদান করতেছে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী অসহায় দরিদ্র মানুষদের। জানাগেছে, আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া ও চুনাখালী গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষের কাছ থেকে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ১লাখ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিয়েছেন ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন। পূর্বচুনাখালী গ্রামের দরিদ্র রাশিদা বেগম বলেন ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন ও ভূমি অফিসের দালাল ডন্ডি সালাম আমাদের একমাসের মধ্যে একটি পাকা ঘর একটি টিওবয়েল দেয়ার কথা বলে ২০ হাজার টাকা নিয়েছেন টাকা নেওয়ার পর আর ঘর দেয়ার কোন খবর নাই ঘর ও টাকার বিষয় জানতে চাইলে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। উত্তর আমড়াগাছিয়া গ্রামের শাহানুর ওরফে শাহা মৃধারকাছ থেকে প্রথমে ২০ হাজার টাকা পরে আনসার ভিডিপি ব্যাংক থেকে ঋন ও আত্মীয় সজনের কাছ থেকে ধারদেনা করে ভুমি অফিসের দালাল ডন্ডি সালামের সহযোগিতায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দেন। ঘরের কথা বললেই এলাকা ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছে আব্দুল মতিন ও দালাল সালাম। ভূক্তভোগি শফিকুল ইসলাম, ঝুমুর বেগম, নান্নু খা, নুর ইসলাম, শাহজাহান মৃধা, মরিয়ম বেগম, পিয়ারা বেগম, আব্দুল জলিল, ধলাইসহ ১৫/২০ জন ভুমিহীন অসহায় বিধাবা নারীদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন। ৫ নং ওর্য়াড ইউপি সদস্য খাদিজা আক্তার পুতুল বলেন, আমার ওয়ার্ডের দরিদ্র মানুষদের ঘর দেয়ার কথা বলে ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন টাকা নিয়েছেন। অসহায় দরিদ্র মানুষগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছেন। টাকা ফেরৎ চাইলে গরীব মনুষদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে আব্দুল মতিন। ক্ষতিগ্রস্থরা তাদের টাকা আদায়ের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আইনশৃংখলা রক্ষা কারী বাহিনীকে প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবী জানিয়েছেন।

কুকুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. বোরহান উদ্দিন আহমেদ মাসুম তালুকদার মুঠোফোনে বলেন, দুস্থ দারিদ্র স্বামী পরিত্যক্তা, বিধবা নারীদের কাছ থেকে ঘর দেয়ার কথা বলে ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা টাকা নেওয়ার বিষয় আমার কাছে অভিযোগ আসার পর ইউনিয়ন ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন কে একাধিকবার বলার পরও সে ক্ষতিগ্রস্থদের টাকা ফেরৎ দেয়নি। মুজিব বর্ষের ঘরের নাম বিক্রি করে গরীব অসহায় মানুষদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে প্রতারনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বরগুনা জেলা প্রশাসক ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী হস্তক্ষেক কামনা করছি। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বিকার করেন। আমতলী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. নাজমুল ইসলাম এ বিষয় কোন কথা বলবেন না বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.কে.এম আব্দুল্লাহ বিন রশিদ মুঠোফোনে বলেন লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।