মিন্নির জামিন বাতিলের আবেদন নিয়ে প্রশ্ন, ইন্ধনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মিন্নির জামিনের দু’দিন পর তড়িঘড়ি করে রিফাত হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল ও একই দিনে জামিন বাতিলের আবেদন নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন। একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে শুরু থেকে নানা নাটকীয়তায় তদন্ত শেষ করে তাড়াহুড়ো করে পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে বলে অভিযোগ অনেকের।

রিফাত হত্যার দুই মাস চারদিন পর, রবিবার বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। ‘গোপনীয়তা’ বজায় রেখে দেয়া অভিযোগপত্রে মিন্নিসহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। একই দিনে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে মিন্নির জামিনের বিপরীতে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। যদিও তা খারিজ হয়ে যায়।

গত ২৭শে জুন, বরগুনা থানায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফের দায়ের করা মামলায় আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি ছিলেন প্রধান সাক্ষী। ১৬ই জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের অভিযোগপত্রে মিন্নিকে সাত নম্বর আসামি করা হয়েছে। এতে, এ মামলায় এখন প্রত্যক্ষ কোনো সাক্ষী নেই। যদিও পুলিশ শুরু থেকেই বলে আসছে, সঙ্গত কারণেই এ মামলায় সাক্ষী থেকে এখন আসামি মিন্নি।

নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, ‘মামলাটি কিছুটা পথ হারিয়েছে। কেননা সঠিক পথে এটা এগুচ্ছেনা। তবে, আমরা আশাবাদী রিফাত হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তারা শাস্তি পাবে।’

বরগুনা জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান হোসনে আরা চম্পা বলেন, ‘আমরা আশা করি মিন্নি সাক্ষী থাকলে যারা খুন করেছে তাদের উপযুক্ত বিচার পাবো।’

মিন্নিকে আসামি করায় সন্তুষ্ট রিফাতের বাবা ও মামলার বাদী আবদুল হালিম দুলাল শরীফ। তিনি জানান, ‘এখন পর্যন্ত আমি সন্তষ্ট। আশা করি ন্যায় বিচার পাবো। আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই। তাদের সর্বোচ্চ বিচার হোক এটাই চাই।’

বাদির নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুল হক কিসলু বলেন, ‘বাদিপক্ষ এ মামলায় সন্তষ্ট, তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। চার্জশিটের ব্যাপারে তিনি কোন নারাজিপত্র দাখিল করবেন না।’

মিন্নির পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবুল বারি আসলাম জানান, ‘রিফাত মৃত্যুর আগে যে জবানবন্দী দিয়ে গেছেন সেটা কিন্তু তার বাবার কাছে। তার বাবা জবানবন্দীর মর্মে এজাহার করেছেন। সেই কথাটা আমরা সকলেই জানি এবং সেটাই সত্য। তারপরও এখন যে চার্জশিট দিয়েছে তা দেখে বিস্তারিত জানাবো।’

বরাবরের মতই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালী মহলের চাপে মিন্নিকে সাত নম্বর আসামি করা হয়েছে। যে ছিলো এ মামলার প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রধান সাক্ষী। যার সাক্ষীর ভিত্তিতে আসামিদের ফাঁসি বা যাবজ্জীবন সাজা হতো। এটাকে আড়াল করার জন্য কুচক্রী মহল মিন্নির বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে।’

তবে, অভিযোগপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি বরগুনার এসপি।