মহামারীকালের মাধ্যমিকে রেকর্ড ৯৩.৫৮% পাস

নিজস্ব প্রতিবেদক
ফাইল ছবি

মহামারীর সঙ্কটে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ শিক্ষার্থী, যা এ যাবতকালের সর্বোচ্চ।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্কুলের গণ্ডি অতিক্রম করা এই শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন জিপিএ ৫ পেয়েছে, যা উত্তীর্ণের মোট সংখ্যার ৮ দশমিক ১৮ শতাংশ।

এই হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ১০ দশমিক ৭১ শতাংশ পয়েন্ট। আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৪৭ হাজার ৪৪২ জন।

গত বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেছিল ৮২ দশমিক ৮৭ শতাংশ, জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবারের মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি নতুন বছরের পাঠ্যবই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

মূল অনুষ্ঠানটি হয় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। বেলা ১১টায় সেখানেই সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

দেশে এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে হয়ে এলেও কোভিড পরিস্থিতিতে এবার নয় মাস পিছিয়ে ১৪ নভেম্বর এ পরীক্ষা শুরু হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় দশম শ্রেণিতে মাত্র চার মাস সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ পায় পরীক্ষার্থীরা।

সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে এ বছর পরীক্ষাও হয়েছে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে। তিন ঘণ্টার পরিবর্তে পরীক্ষা হয়েছে দেড় ঘণ্টায়য়। কেবল তিনটি নৈর্বচনিক বিষয়ের পরীক্ষায় বসতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

বাংলা, ইংরেজির মত আবশ্যিক বিষয়গুলোতে এবার পরীক্ষা না নিয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

এবার ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক ও সমমানের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাদের মধ্যে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন পাস করেছে।

এর মধ্যে নয়টি সাধারণ বোর্ডে ৯৪ দশমিক ০৮ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে ৯৩ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে ৮৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।

এবার পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা- দুদিক দিয়েই সংখ্যায় এগিয়ে আছে মেয়েরা।

ছাত্রদের পাসের হার যেখানে ৯২ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সেখানে ছাত্রীদের মধ্যে ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ পাস করেছে।

মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় এবার ১১ লাখ ৪২ হাজার ৯৪ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬২৮ জন।

আর ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৩০১ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল, তাদের মধ্যে পাস করেছেন ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৯১৮ জন।

আর পূর্ণাঙ্গ জিপিএ, অর্থাৎ পাঁচে পাঁচ পাওয়া এক লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৭৯ হাজার ৭৬২ জন ছাত্র এবং ১ লাখ ৩ হাজার ৫৭৮ জন ছাত্রী।

এর আগে ২০১৪ সালে সব বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ছিল ৯২ দশমিক ৬৭ শতাংশ, এতদিন সেটাই ছিল সর্বোচ্চ।

ফলাফল জানা যাবে যেভাবে

বেলা ১২টা থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট ও মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে।

ওয়েবসাইটে (www.educationboardresults.gov.bd) পরীক্ষার্থীদের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে এসএসসির ফল পাওয়া যাবে।

মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানতে SSC লিখে স্পেস দিয়ে শিক্ষা বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসেই ফল পাওয়া যাবে।

দাখিলের ফল পেতে Dakhil লিখে স্পেস দিয়ে Mad লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে।

কারিগরি বোর্ডের ক্ষেত্রে SSC লিখে স্পেস দিয়ে Tec লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে স্পেস দিয়ে ২০২১ লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে ফলাফল জানানো হবে।

এছাড়া জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অফিস থেকে ফলাফলের কপি সংগ্রহ করা যাবে বলে জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।