মসজিদে বিস্ফোরণ, অবহেলা কার খুঁজছে সিআইডি

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় করা মামলা ফতুল্লা মডেল থানা থেকে সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে এ মামলা হস্তান্তর করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের পরিদর্শক বাবুল হোসেন বলেন, অবহেলার দায় খুঁজতে সিআইডির তদন্তকারী দল মসজিদ কমিটি, ঘটনার সাক্ষী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে যে-ই জড়িত থাকুন না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে এবং প্রকৃত সত্য উদ্‌ঘাটন করা হবে।

৪ সেপ্টেম্বর রাতে শহরের পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৩৭ জনকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ পর্যন্ত এক শিশুসহ ৩১ জনের মৃত্যু হয়। ওই বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে গেছে ও থাই জানালার গ্লাস উড়ে গেছে।

মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গত শনিবার মসজিদ পরিচালনা কমিটি, তিতাস গ্যাস ও ডিপিডিসির অবহেলাকে দায়ী করে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেন ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবির। দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারার এ মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি জরিমানা বা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ড।

বিস্ফোরণের ঘটনায় মসজিদ কমিটি অভিযোগ করেন, গ্যাস লিকেজের বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে লিকেজ মেরামত করতে তিতাস গ্যাস থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ চাওয়া হয়। তাঁরা ঘুষের টাকা জোগাড় করতে পারেননি বলে গ্যাস লিকেজ মেরামত করা যায়নি। মসজিদ কমিটির এই বক্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) ও সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির গণশুনানিতে ৪৩ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। ডিপিডিসি মসজিদের সামনে থেকে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও একটি খুঁটি সরিয়ে নিয়েছে।

বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে তিতাস গ্যাস মসজিদের পূর্ব ও উত্তর পাশের সড়কের পুরো মাটি খুঁড়ে পরিত্যক্ত পাইপলাইনে ছয়টি ছিদ্র দেখতে পান। এরপর গত সোমবার তিতাসের চার কর্মকর্তাসহ আটজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।