ভূয়া চিকিৎসকের অপারেশনে মা ও নবজাতকের মৃত্যু, প্রতিবাদের ঝড়

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে জাহাঙ্গীর নামে এক ভুয়া চিকিৎসকের অপারেশনে মা ও নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল মঙ্গরবার (১১ জানুয়ারি ) রাতে জেলা শহরের একতা নার্সিং হোম নামে ক্লিনিকে এ দূর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদে ঝড় বইছে।
স্বজন ও এলাকাবাসি জানান, সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের খলিশাকুড়ী গ্রামের মকলেশ উদ্দিনের প্রসুতি স্ত্রী নাসিমা বেগম (৩০) কে মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি ) বিকেলে শহরের একতা নার্সিং হোম ক্লিনিকে ভর্তি করান। ক্লিনিক কর্র্তৃপক্ষের পরামশে ভুয়া চিকিৎসক জাহাঙ্গীরকে চুক্তির পর ওই ক্লিনিকে সন্ধ্যায় অপরাশেন করান। অপরাশনের সময় ভুয়া চিকিৎসকের ভুলে অতিরিক্ত রক্ত খনন হলে চিকিৎসক পালিয়ে যান।
পরে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ উপায় না পেয়ে রোগীকে দ্রæত একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে অনত্র পাঠাতে চাইলে রোগী ও শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনার পর স্থানীয়রা ক্লিনিক ঘেড়াও করে প্রতিবাদ জানালে কৌশলে সবাই পালিয়ে যায়। নিরুপায় হয়ে পরে অপারেশন করাতে আসা দরিদ্র পরিবারে সবাই। সুরাহা ছাড়াই মা ও শিশুর লাশ নিয়ে বাড়িতে যান স্বজনরা।
এমন মৃত্যু মেনে নিতে না পারায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একের পর এক প্রতিবাদের ঝড় বইতে শুরু করে। তবুও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা।
স্বাস্থ্য সংশ্লিস্টরা জানান, এমবিবিএস ডাক্তার না হলেও তিনি পিএসডি করেছেন দাবি করে জাহাঙ্গীর দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন চালিয়ে আসলেও স্বাস্থ্য বিভাগ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। আর সেকারনে দুবছরে জেলার সুশ্রী নাসিং হোম, সেভেন ডে ক্লিনিকসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করাতে গিয়ে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে। তার শাস্তি না হলে অসহায় মানুষ তার হাতে আবারো প্রাণ হারাতে পারে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন অপারেশন ভাল হয়েছে রোগীর অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। রিপোর্ট করে কি হবে এর আগে আমি জেলও খেটেছি তার পরেও আমি অপারেশন করবোই। তবে তিনি তার বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে রাজি হয়নি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে শীর্ষ কর্মকর্তা সিভিল সার্জন ডাঃ নুর নেওয়াজ জানান, জাহাঙ্গীরের ভুল অপারেশনে বেশ কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে। থানায় তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল জেলও খেটেছিল শুনেছি। আমি এ জেলায় নতুন তার বৈধ কাগজপত্র আছে কি না স্বাস্থ্য বিভাগের ব্যবস্থাপনা কমিটির টিম গঠন করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শুনেছি অভিযোগ পেলে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আইনগত প্রদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।