বেনামি অভিযোগ নিয়ে বেনাপোল শুল্ক কার্যালয়ে অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতবেদক : বেনাপোল কাস্টমস কমিশনারের বিরুদ্ধে বেনামি অভিযোগ তদন্ত নিয়ে বিসিএস কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। কাস্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে বারবার ভুয়া ও বেনামি অভিযোগের তদন্ত করার অভিযোগ উঠেছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত এসব অভিযোগের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। এদিকে বেনাপোল শুল্ক কার্যালয়ে তদবির করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

কাস্টমস কমিশনার বেলাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে নয় মাস ধরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) যশোর বিভাগীয় অফিসসহ তিন শাখা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তদন্ত করে। এনবিআরের তদন্তে ১৫টি অভিযোগের একটিও প্রমাণ না হওয়ায় তদন্তের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। এর আগে একটি অভিযোগের তদন্ত করেন দুদক যশোর কার্যালয়ের উপপরিচালক নাজমুস সাদাত। ওই তদন্তেও অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। বারবার বেনামি অভিযোগের তদন্ত নিয়ে কাস্টমস ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

তদন্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিসিএস আয়কর অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব নুরুজ্জামান খান বলেন, একজন কমিশনারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর আগে একটু দেখে-শুনে করা উচিত ছিল। এতে সরকারের অর্থ সাশ্রয় হতো। উৎকণ্ঠা কাটিয়ে কর্মকর্তারাও স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারতেন। বিসিএস কাস্টমস ও ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ মুসফিকুর রহমান বলেন, আমরা যে কোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে। কমিশনারকে হয়রানি করতে দুদকের কর্মকর্তা পরিচয়দাতা আহসান আলী এমনটা করেছেন। দুদকের কয়েকজন কর্মকর্তা আহসানকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।

বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী জানান, আড়াই টন ভায়াগ্রা আটকের আগে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ ছিল না। ৩১টি চালানের শুল্ক ফাঁকির আবদার না রাখায় ডিসেম্বরে আহসান দুদকে বেনামি অভিযোগ করেন। ২৪ জুলাই ভায়াগ্রা আটকের পর তার পেছনে লেগেছেন আহসান। তিনি বলেন, পৌনে দুই বছরে তার কোনো কর্মকাণ্ড নিয়ে সংবাদপত্রে একটি নেতিবাচক সংবাদও প্রকাশিত হয়নি।

তিনি বলেন, দুর্নীতি করি না, প্রশ্রয়ও দেই না। এর আগে বেলাল চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করেছেন এনবিআর সদস্য (শুল্ক, নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া। ২৪টি অভিযোগ ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালে তার বিরুদ্ধে সম্পদবিবরণীসহ চারটি অভিযোগ তদন্ত করা হয়। তদন্তে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। আরেকটি বেনামি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল হাসান গাজী তদন্ত করছেন।

বেনাপোল শুল্ক কার্যালয়ে তদবির করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে ২০ লাখ টাকা শুল্ক কম দিতে কাস্টমস কমিশনারকে আহসান চাপ দেন। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন সচিব তার বন্ধু বলে তিনি জানাচ্ছেন। এছাড়া এনবিআর চেয়ারম্যানের পিএসের নামও তিনি বলেন। এ সময় এক ব্যক্তিকে দিয়ে তিনি ফোনও করান।