বিশ্বনাথ পৌরসভা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বিএনপি নেতা তোলপাড় ক্ষোভ

সিলেট প্রতিনিধি:
সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভা আওয়ামী লীগের কমিটিতে বিএনপি নেতার স্থান পাওয়া নিয়ে তোলপাড় চলছে! তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে মাঠ পর্যায়ের ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে।

একটি কমিটি ভেঙ্গে দুটি কমিটি গঠন করার পরও ওই কমিটিগুলোতে দলের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী স্থান না পেলেও পৌর আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বিএনপি নেতা এবং বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীণ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনকারীদের অন্যতম হোতা এবং বিভিন্ন নাশকতামুলক মামলায় কারাভোগকারী ওদুদ মিয়া মেম্বার।

সে উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারন সম্পাদক এবং উপজেলা বিএনপির বর্তমান শীর্ষনেতা কয়েকটি মামলার আসামী ও উপজেলা পরিষদে হামলা নাশকতা ও ইউএনওর গাড়ী পোড়ানো মামলার আসামী ও বিভিন্ন সময়ে কারাভোগকারী পলাতক লিলু মিয়ার চাচাতো ভাই। ওদুদ মিয়াও এসব নাশকতা মামলার এবং নিজ ইউনিয়নেও পুলিশের উপর হামলাসহ বিভিন্ন নাশকতা মামলার আসামী ছিলো। ক্ষোভের সাথে এলাকার অনেকেই জানান এসব নাশকতায় সে সক্রিয়ভাবে নেতৃত্বও দিয়েছিল যার প্রমাণ সবার হাতে হাতে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় পৌদনাপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও যুক্তরাজ্য যুবলীগের একজন ত্যাগী নেতার উপর রামধানা এলাকায় অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিল বলেও ক্ষোভের সাথে জানান যুক্তরাজ্য যুবলীগের ওই মজলুম নেতা। এছাড়া যুক্তরাজ্য যুবলীগের ওই নেতার পিতা প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাসহ অলংকারী ও পৌদনাপুরের অনেক নীরিহ আওয়ামী লীগের সমর্থক ও সাধারন মানুষকে বিএনপির আমলে রাতের আধারে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে নিয়ে থানায় নির্যাতনের ও কারা নির্যাতনের মুল হোতাও ছিল ওই অলংকারী ইউনিয়ন যুবদলের শীর্ষনেতা ওদুদ মেম্বার।

এছাড়া এলাকার মানুষের কাছ থেকে বিদ্যুৎ আনার কথা বলে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতকারী এবং সম্প্রতি
সিলেটে র‌্যাবের ভ্রাম্যমান আদালতের বিরুদ্ধে সিলেট শহরের ব্যস্ততম এলাকা জিন্দাবাজারে রাস্তা অবরোধে নেতৃত্বদানকারী লিলু মিয়ার সকল অপকর্মের সহযোগী হিসেবেও সে
এলাকায় চিহ্নিত।

উল্লেখ্য সদ্য ঘোষিত আওয়ামী লীগের পৌর ও বিশ্বনাথ ইউনিয়ন কমিটিতে স্থান হয়নি সদ্য বিলুপ্তকৃত ৬৫ সদস্যের বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন কমিটিতে থাকা ৩৯ নেতার।

বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের প্রায় ৭০% এলাকা পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ফলে বিশ্বনাথ সদর উনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। আর গত ২৬ নভেম্বর পৌর এলাকার বাইরে
থাকা অংশ নিয়ে বিশ্বনাথ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নতুন আহবায়ক কমিটি ও উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অংশ বিশেষ নিয়ে গঠিত পৌরসভার প্রথম আহবায়ক কমিটি ঘোষণা
করে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

পৌর কমিটিতে অনেক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব
পালনকারী দুজনের একজনও যেমন কেউ স্থান পাননি তেমনি উপেক্ষিত হয়েছেন অনেক ত্যাগী নেতারা।
সদ্য ঘোষিত বিশ্বনাথ পৌর ও ইউনিয়ন কমিটিতে স্থান পাননি সদ্য বিলুপ্তকৃত বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কমিটির ৪ জন সহ সভাপতি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক, দপ্তর সম্পাদক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক, ১ জন সাংগঠনিক সম্পাদক, সহ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ১৭ জন কার্যনির্বাহী সদস্য। এছাড়া কমিটিতে থাকা আরোও ৭ জন কার্যনির্বাহী সদস্য ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করেছেন।

কমিটি দুটিতে নতুন অনেক নেতাকর্মী স্থান পেলেও বিগত সময়ে কমিটিতে থাকা দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত না করার ফলে আবারও তারা দলের পদ-পদবীর
বাইরেই থেকে গেলেন। বিভিন্ন নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে পরিশ্রম করেন তাদের বেশিরভাগকে বাদ দিয়ে কমিটি দুটি ঘোষণা করা নিয়ে নানান
জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়েছে।

ছবি-১: নিখোজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সিলেট জেলা বিএনপি নেত্রী তাহসিনা রুশদির লুনার সাথে টুপি মাথায় ওদুদ মিয়া।

ছবি-২ ও ৩ : বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী নিখোজ হওয়ার পর ইলিয়াস আলীর ইউনিয়ন থেকে ওই ইউনিয়ন যুবদল নেতা ওদুদ মিয়ার নেতৃত্বে মিছিল করে উপজেলা সদরে গিয়ে থানায় ও উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন অফিসে হামলা চালায় ও ইউএনওর গাড়ি পুড়ায়। ওই হামলায় বিশ্বনাথ উপজেলায় তিনজন নিহত হয় এবং বেশ কয়েকজন পুলিশ গুরুতর আহত হয়।

ছবি-৪: উপজেলা বিএনপির সদ্য সাবেক সাধারন সম্পাদক এবং উপজেলা
বিএনপির বর্তমান শীর্ষনেতা কয়েকটি মামলার আসামী ও উপজেলা পরিষদে হামলা নাশকতা ও ইউএনওর গাড়ী পোড়ানো মামলার আসামী ও বিভিন্ন সময়ে কারাভোগকারী পলাতক লিলু মিয়া কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হলে তাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করছে ওদুদ মিয়া।