বিজয় লগ্নে শপথ পড়াবেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তিযুদ্ধে বাঙালির বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর ঐতিহাসিক লগ্নে আগামী ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি ‘শপথ অনুষ্ঠান’ পরিচালনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দুটি সভা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ মিলিয়ে আমরা ইতিহাসের অসাধারণ সময় অতিক্রম করছি। এর উদযাপনে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠান হবে।”
১৬ ডিসেম্বর জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে বড় আকারে কুচকাওয়াজ হবে। সেখানে অনেকগুলো দেশ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক প্যারেড হবে এবার।
জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির আয়োজনে ‘মহা বিজয়ের মহা নায়ক’ শিরোনামে অনুষ্ঠান হবে ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর বিকালে।
কামাল চৌধুরী বলেন, “১৬ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী সেখান থেকে সারা বাংলাদেশে একটি শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন, সেখানে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবেন।”
তবে ওই শপথ অনুষ্ঠানের বিষয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য না দিয়ে তিনি বলেন, “পরে আপনাদেকে বিস্তারিত জানাব।”
বিজয় দিবসের বিকালে সাড়ে ৫টা থেকে আলোচনাসভা শুরু হবে। ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ সেখানে অংশ নেবেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীও থাকবেন।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপনে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ৫০ বছরের বাংলাদেশের নানা অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা হবে বলে জানান প্রধান সমন্বয়ক।
করোনাভাইরাস পরীক্ষার প্রতিবেদন ছাড়া কেউ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না জানিয়ে প্রধান সমন্বয়ক বলেন, “যেহেতু স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে, পরীক্ষাটা বাধ্যতামূলক।
“স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছু আমরা ফলো করব। সব মিলিয়ে প্রতিদিন তিন হাজার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। অনুষ্ঠান সারা দেশের পাশাপাশি সারা পৃথিবীতে সম্প্রচার হবে।”
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান এবং সেখানে নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-কমিটির পঞ্চম সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনে আসেন কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের বিজয় দিবসের ৫০ বছরের পূর্তি হতে যাচ্ছে। সেজন্য মানুষের মধ্যে একটা আগ্রহ রয়েছে। তারা সবাই উন্মুখ হয়ে আছেন তারা সবাই অংশ গ্রহণ করবেন।
“বাংলাদেশের যে যেখানে থাকেন, তারা এ অনুষ্ঠানগুলোতে অংশ নেবেন, যাতে নিরাপত্তার অভাব অনুভব না করেন। এজন্য আমরা মিটিং করেছি।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দুটি অনুষ্ঠান ঘিরে ট্রাফিক ব্যবস্থা কী হবে, নিরাপত্তার জন্য কী কী চ্যালেঞ্জ হতে পারে- সবকিছু নিয়ে আলাপ হয়েছে। যার যা করণীয় সেগুলো ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
“এখন পর্যন্ত জেনেছি একজন রাষ্ট্রপ্রধান আসবেন। বিদেশি মেহমান আরও কিছু আসার কথা। বিদেশি মেহমান যারাই আসবেন, তাদের নিরাপত্তা, তাদের আসা-যাওয়া, তাদের অবস্থান…
“বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্যারেড স্কয়ার ও জাতীয় সংসদের সামনে মুজিব জন্মশতবর্ষের শেষ অনুষ্ঠান এবং বিজয় দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সব মিলে আমরা যে অনুষ্ঠানগুলো করতে যাচ্ছি, এর সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “সবকিছু সুন্দরভাবে যাতে হয়, সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নিরাপত্তা বাহিনী এ বিষয়ে অভিজ্ঞ, অনেকগুলো এই ধরনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান এখানে হয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে তাদের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে।
“আমরা মনে করি এই অভিজ্ঞতার আলোকে সবকিছুই নিরাপদে করতে পারবে। এখন পর্যন্ত যা শুনেছি, সবধরণের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে এটাকে সফল করার জন্য।”
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।