বিএনপিতে তবুও তারা গুরুত্বহীন

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির জন্য তাদের ত্যাগ কম নয়। আন্দোলন করেছেন, জেল খেটেছেন, যখন যে কাজ তাদের দেয়া হয়েছে, সেই কাজ নিষ্ঠার সাথে পালনও করেছেন। দলে জনপ্রিয়, এলাকাতেও তাদের প্রভাব কম না। কিন্তু তারপরও দলে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন নেই। তারা জিয়া কিংবা তারেক জিয়ার আস্থাভাজন নন। একারণেই দলে তারা গুরুত্বহীন। বিএনপিতেই তাদের নিয়ে চর্চা হয়, বলা হয় অথর্ব, বুড়ো আর নিষ্ক্রিয়দের বাদ দিয়ে তাদের সার্ভিস যদি দল নিতো তাহলে দল উপকৃত হতো, কর্মীরাও চাঙ্গা থাকতো। বিএনপির এরকম কয়েকজন নেতাকে নিয়েই এই প্রতিবেদন;

১. আবদুল্লাহ আল নোমান: বিএনপির বিশ্বস্ত এবং পরীক্ষিত নেতা। বেগম খালেদা জিয়ার আস্থাভাজন কিন্তু তারেক জিয়া তাকে পছন্দ করেন না। এক সময়ে চট্টগ্রামে বিএনপির প্রধান কাণ্ডারি বলা হতো নোমানকে। কিন্তু, গত কাউন্সিলে তার যখন স্থায়ী কমিটিতে জায়গা হয়নি, তখন দলে সবাই অবাক হয়েছিলেন। রাজনীতি ছাড়তে চেয়েছিলেন, কিন্তু বেগম জিয়ার অনুরোধে এখনও বিএনপিতে আছেন। বিএনপির অনেকেই মনে করেন, তাকে কাজে লাগানো হলে, দলের উপকার হতো।

২. মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন: দলে এবং দলের বাইরে তার গ্রহণযোগ্যতা বেশ। ওয়ান ইলেভেনে সামান্য স্খলন ছাড়া রাজনীতিতে তার কোন কালিমা নেই। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তিনি জনপ্রিয়। কিন্তু বেগম জিয়া বা তারেক জিয়ার আস্থাভাজন না হওয়ায় দলের স্থায়ী কমিটিতে জায়গা হয়নি। দলের নীতি নির্ধারক না হলেও বেগম জিয়ার গ্রেপ্তারের পর তার কথাবার্তায় কর্মীরা আশান্বিত হন। স্পষ্টবাদী এবং বিএনপির জনপ্রিয় চিন্তাকে ধারণ করলেও তিনি বিএনপির নীতি নির্ধারক নন।

৩. শামসুজ্জামান দুদু: বিএনপিতে শামসুজ্জামান দুদুর ইতিহাস হলো বঞ্চনার ইতিহাস। নব্বইয়ে ডাকসু নির্বাচনে তার ভিপি প্রার্থী হবার কথা ছিলো সে সময় তিনি ছিলেন ছাত্রদলের সভাপতি। কিন্তু তাকে বাদ দিয়ে আমান উল্লাহ আমানকে দেওয়া হয় ভিপি পদে মনোনয়ন। সেই থেকে শুরু। এখনো তিনি বিএনপিতে যথাযথ সম্মান পাননি বলেই মনে করেন, দলের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু দলের সংকটে সব সময়ই তিনি সামনে থেকেছেন, কথা বলেছেন।

৪. অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন: ক’দিন আগেও তিনি সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ছিলেন। একটা সময়, বিশেষ করে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাতীয় রাজনীতির বড় ফ্যাক্টর ছিলেন। কিন্তু আইনজীবীদের নেতা হয়েও দলে তিনি গুরুত্বহীন। নানা প্লাটফর্মে দলের জন্য গলা ফাটালেও দলের মালিকদের কাছে তিনি মূল্যহীন।

৫. হাবীবুন্নবী খান সোহেল: একটা সময় বিএনপি ছিলো তরুণ নির্ভর দল। এখনো বিএনপির রাজনীতিতে যে তরুনরা উদ্দীপ্ত করেন তাদের মধ্যে হাবীবুন্নবী অন্যতম। দলের জন্য তার ত্যাগ প্রথম পাঁচজনের মধ্যে। কিন্তু তারপরও সোহেল বিএনপিতে বঞ্চিত বলেই মনে করে দলের অনেক নেতাকর্মী।

বিএনপির রাজনীতিতে এরকম ত্যাগীদের সংখ্যা কম নয়। অনেকের মতে, বিএনপির আজকের দুরাবস্থার জন্য ত্যাগীদের মূল্যায়ন না হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ।