বাগাতিপাড়ায় অনুমতি না থাকলেও রেলওয়ের জায়গায় ইউএনও পার্ক!

সালাহ উদ্দিন , নাটোর প্রতিনিধি :

জায়গা বাংলাদেশ রেলওয়ের হলেও করা হয়েছে পার্ক। এর নাম দেয়া হয়েছে ইউএনও পার্ক। শুরুতে উপজেলা পরিষদ ওই পার্কে অর্থ বিনিয়োগ করলেও পরে নেয়া হয়েছে ব্যাক্তি শেয়ার। টিকেটের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্তও করা হয়েছে। তবে ওই পার্ক করার জন্য এখনও নেয়া হয়নি কর্তৃপক্ষের অনুমতি।

 

 

জানা যায়,২০১৬ সালে বাগাতিপাড়ার তৎকালীন ইউএনও খন্দকার ফরহাদ আহমেদ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই পার্কটি গড়ে তুলেছিলেন। বাগাতিপাড়া পৌরসভার লক্ষণহাটী এলাকায় ওই পার্কের অবস্থান। পার্কটির পাশেই বড়াল নদী। নদীর ওপর ব্রীজের পশ্চিম দিক দিয়ে চলে গেছে রেললাইন।

 

এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান অহিদুল ইসলাম গোকুল জানান,রেলওয়ের প্রায় সাড়ে চার বিঘা জায়গায় পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু ওই ইউএনও বদলী হয়ে গেলে পার্কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমান ইউএনওর চেষ্টায় পার্কটির অবশিষ্ট কাজ শেষ করে বুধবার ২০টাকা টিকেটের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে।

 

এব্যাপারে ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল জানান,পার্কটির কাজে এ পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের ১৫-২০ লাখ টাকা খরচ করা হয়েছে। পরে আর্ট হকার নামে এক প্রতিষ্ঠানের স্বত্বধিকারী পলাশকে প্রাইভেট পার্টনার হিসেবে নিয়ে অবশিষ্ট কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা হয়েছে। পলাশেরও প্রায় একই পরিমান টাকা ইনভেস্ট করতে হয়েছে দাবী করে তিনি বলেন,পার্ক থেকে আয়ের ৭০ ভাগ পলাশ আর ৩০ ভাগ উপজেলা পরিষদ পাবে। পরবর্তি ইনভেস্ট প্রয়োজন হলে পলাশ করবে।

 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইউএনও’র নামে পার্ক করতে আইনত কোন বাধা নেই। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান,পার্ক করার অনুমতি চেয়ে রেলওয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তবে এখনও অনুমতি পাওয়া যায়নি। দ্রুতই অনুমতি পাওয়ার আশা করেন তিনি।

 

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ওই পার্ক করার বিষয়টি তার জানা নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,অনুমতি না নিয়ে এ ধরণের কাজ করা যায়না। যথাযথ নীতিমালা মেনে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে অনুমতি পেলেই তার পর তাতে কাজ করা আইনসিদ্ধ। বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলেও দাবী করেন ওই কর্মকর্তা।

 

পার্কটির প্রতিষ্ঠাতা ইউএনও খোন্দকার ফরহাদ আহমদ বর্তমানে নাটোর জেলা পরিষদে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন,পার্কটির মূল জায়গা হলো ১নং সরকারী খাস খতিয়ান। ওরসাথে রেলওয়ের জায়গা সংযুক্ত করা হয়েছে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,ওই জায়গায় জেলা পরিষদও ইনভেস্ট করেছে।

 

এক্ষেত্রে উপজেলা পরিষদ আয়ের ৩০ ভাগ আর ব্যাক্তি শেয়ার ৭০ ভাগ পেতে তো পারেই না উপরন্তু পার্কটিতে ব্যাক্তি শেয়ার নেয়াই আইনসিদ্ধ হয়নি বলে মনে করেন তিনি। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন,ওই জায়গা সম্পর্কে তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বলা যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,ইউএনও একটি প্রতিষ্ঠান। এটা যেহেতু কারও নাম নয় তাই ওই নামে পার্ক করতে বাধা নেই।