বন্যায় বিপাকে গর্ভবতীরা, মিলছে না সেবা

প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের বানভাসি মানুষদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন গর্ভবতী মায়েরা। জেলার অর্ধেক অংশ বানের পানিতে তলিয়ে আছে। ফলে বিপুল সংখ্যক গর্ভবতী মা বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধ, সড়কসহ বিভিন্ন জায়গায় কোন রকমে আশ্রয় নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, প্রয়োজনীয় সেবা দিতে তাদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
ভয়াবহ বন্যায় কুড়িগ্রামের প্রায় ১ হাজার ২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ৮৯৪টি গ্রামের প্রায় ২ লাখ ৩৯ হাজার পরিবারের সাড়ে ৯ লাখ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন।
এ অবস্থায় হাজার-হাজার পরিবার বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধ ও সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। এখানে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি পয়:নিষ্কাশন সমস্যায় ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছেন তারা। নিকটস্থ কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়ে চেকআপ এবং পরামর্শ নিলেও অনেকের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না।
সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের নওয়াবস ও শুলকুরবাজার থেকে ভাঙারমাথা পর্যন্ত বাঁধ-সড়কে আশ্রয় নেয়া গর্ভবতীদের অভিযোগ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মাঠকর্মীরা তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন না।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এক গর্ভবতী নারী বলেন, আমি সাত মাসের গর্ভবতী। আমার কোনো খোঁজ নেয়নি। আমরা রাস্তায় আছি ১০/১২ দিন। কেউ খোঁজ নেয় না।
নিয়মিত চেক আপের পাশাপাশি তবে যারা আসতে পারছেন না তাদের আশ্রিত স্থানে গিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে বলে দাবি কমিউনিটি ক্লিনিকের।
কুড়িগ্রাম সদরের শুলকুরবাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার রেশমা পারভীন বলেন, কিছু গর্ভবর্তী ক্লিনিকে আসে, আমরা তাদের সেবা দেই। কিছু মাঠকর্মী আছে তারা বাইরে সেবা দেই।
বন্যা কবলিত এলাকার গর্ভবতী মায়েদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার পাশাপাশি দ্রুত প্রয়োজনীয় সেবা দিতে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম বলেন, যেকোনো সমস্যায় আমরা সেবা দেই। প্রয়োজনে নৌকাযোগে দ্রুত সেবা দেয়া হয়।
জেলার ৯ উপজেলায় বর্তমানে ২ হাজার ৮১৪ জন গর্ভবতী মা রয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানা আক্তার।