প্রধানমন্ত্রীর ভয়ংকর শত্রুরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন শেখ হাসিনা। নিজের দলে তাঁর কর্তৃত্ব নিরুঙ্কুশ এবং প্রশ্নাতীত। জাতীয় সংসদে তাঁর দলের একচ্ছত্র আধিপত্য। কিন্তু তারপরেও আগামী পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পথ চলা কুসুমাস্তীর্ন নয়। ভয়ংকর শত্রুরা এখনও তৎপর। রাজনৈতিক ভাবে তাকে মোকাবেলা করতে না পেরে, অন্যপথে খুঁজতে পারে এই শত্রুরা। এরা প্রত্যেকেই বিত্তবান, জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। উন্নয়ননের সংগ্রামের পাশাপাশি, এইসব শত্রুদেরও মোকাবেলা করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। কারা এরা? আসুন দেখি-

১. তারেক জিয়া: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। রাজনীতির লড়াইয়ে শেখ হাসিনা বেগম জিয়াকে ভালো ভাবেই পরাজিত করেছেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক জিয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিপক্ষ নয়, শত্রু। কারণ তারেক জিয়া শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে চায় না। ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা তার প্রমান। তারেক জিয়া রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়নের এক প্রতিশব্দ। ‘যেকোন মূল্যে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উৎখাত তার প্রকাশ্য লক্ষ্য। তারেক জিয়ার সংগে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দণ্ডিত তারেককে দেশে ফিরিয়ে আইনের আওতায় আনার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। আগামী পাঁচ বছর এই শক্রকে মোকাবেলা করতে হবে প্রধানমন্ত্রীর।

২. যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান: যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদের দণ্ড কার্যকর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে তিনি মুক্তিযুদ্ধের রক্তের ঋণ শোধ করেছেন। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা দীর্ঘদিন ফুলে ফেপে উঠেছে। এরা অনেকেই বিদেশে বসে বাংলাদেশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এদের প্রধান টার্গেট শেখ হাসিনা। এরাও শেষ হাসিনাকে হঠাতে সব কিছুই করতে প্রস্তুত। এই শত্রুদের ব্যাপারেও শেখ হাসিনাকে সতর্ক থাকতে হবে আগামী পাঁচ বছর।

৩. ড. মুহম্মদ ইউনূস: শান্তিতে নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বৈরথ এক যুগের। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার ঘটনার প্রতিবাদ পুরো বাংলাদেশ জানালেও ড. ইউনূস ন্যূনতম সমবেদনা জানাননি। ড. ইউনূস ছিলেন ওয়ান ইলেভেনের পরিকল্পক এবং মাইনাস ফর্মুলার উদ্যোক্তা। তাঁর ব্যক্তিগত তৎপরতার কারণেই পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হয়েছিল। এখন তিনি সুযোগ পেলে বিশ্বের নানা প্রান্তে শেখ হাসিনার সমালোচনায় মুখর হন। সামনের দিনগুলোতে ড. ইউনূসের তৎপরতা বাড়বে বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

৪. ৭৫ এর খুনীরা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার হত্যার বিচার করেছেন। এটা তাঁর বিরাট বড় কৃতিত্ব। কিন্তু বিচারের রায়ে দোষীদের সবার দণ্ড এখনও কার্যকর করতে পারেননি। খুনী রশীদ, খুনী ডালিমসহ বেশ ক’জন খুনী এখনও বিদেশে পলাতক। এদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় সাফল্য নেই। এরা শেখ হাসিনার ভয়ংকর শত্রু। এদের কাজ একটাই শেখ হাসিনাকে ছোবল মারা।

শেখ হাসিনার এই ভয়ংকর ৪ শত্রুর বাইরেও শত্রু আছে। সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সারাক্ষনই শেখ হাসিনার ক্ষতি চান, ২১ আগষ্টের দণ্ডিত পলাতকরা। জঙ্গী এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীতো তার চিরকালের শত্রু। দলের মধ্যেও যারা সংস্কারপন্থী ছিলেন, তারা শেখ হাসিনার মঙ্গল চান একথা কি কেউ হলফ করে বলতে পারবে। ভয়ংকর শত্রুদের সঙ্গে এরা যে কেউ যেকোন সময়েই ‘সহযোগী’ হতে পারে। বিপুল জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর লক্ষ্য অর্জন করতে হবে এই শত্রুদের মোকাবেলা করেই। এখন তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেই, আছে ভয়ংকর শত্রু।