প্রতিবাদ করার কারণেই পদ হারাণ আসাদ

ডাঃ মোঃ হাফিজুর রহমান (পান্না): রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নিয়ে দলকে সংগঠিত করেছেন সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ। আর জামায়াত-বিএনপিকে দলে ভিড়িয়ে বিতর্কিত হয়েছেন সদ্য বিদায়ী সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। মূলত এ বিষয়টি নিয়েই ফারুকের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয় আসাদের। আর এ বিরোধের কারণে পদ হারাতে হলো দুজনকেই।

রোববার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি হয়েছেন সাবেক এমপি মেরাজ উদ্দিন মোল্লা। আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন আরেক সাবেক এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ফারুকের পদ হারানোর পেছনে অনেক কারণ আছে। কিন্তু আসাদ পদ হারালেন শুধু ফারুক চৌধুরীর বিতর্কিত কর্মকা-ের প্রতিবাদ করার কারণে।

সবার ধারণা আসাদ এবার সভাপতি পদের প্রার্থী ছিলেন। আসাদ ছাত্র রাজনীতি থেকেই ছিলেন বিভিন্ন পদে। এই প্রথম তিনি ছিটকে পড়লেন। ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছিলেন নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে। এরপর সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি, মহানগরীর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, আহ্বায়ক ও সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সর্বশেষ কমিটিতে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক।

দলীয় নেতাকর্মীরা সবাই ভেবেছিলেন, ফারুক চৌধুরী সভাপতির পদ হারাচ্ছেন এটা নিশ্চিত। তেমনি নিশ্চিত ছিলেন সভাপতি হচ্ছেন আসাদ। কাউন্সিলরদের ভোট দেয়ার সুযোগ হলেই নিশ্চিত ভাবেই

নেতৃত্বে আসছেন আসাদ। কাউন্সিলরদের ভোট দেয়ার সুযোগ হয়নি। আসাদও নেতৃত্বে আসেননি। এ নিয়ে তৃণমূল থেকে শুরু করে জেলা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এই হতাশা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আসাদকে নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দিচ্ছেন অনেকেই।

আসাদ নিজেও ফেসবুকে একিট পোস্ট দিয়েছেন রাতে। সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার সময়ের নিজের একটি ছবির ক্যাপসনে লিখেছেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাবেক হলাম, অভিনন্দন নতুন নেতৃত্ব। তার এই ছবিতে নানারকম মন্তব্য করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।

নাজমুল হোসাইন নামের একজন তার ফেসবুকে লেখেন, আমরা ছাত্ররা ভাবতাম, আমাদের পাশে কেউ থাকুক বা না থাকুক আমাদের একটা অভিভাবক আছে। কিন্তু আজ আমরা আপনাকে হারিয়ে পুরো এতিম হয়ে গেলাম। সাঈদ হাসান নামে একজন তার ফেসবুকে লেখেন, আপনি পদ পাননি। কিন্তু রাজশাহী জেলার প্রতিটা উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌরসভা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর প্রাণ আসাদুজ্জামান আসাদ। শরিফুল ইসলাম নামে একজন সংবাদকর্মী লেখেন, রাজশাহী আওয়ামী লীগের কি হবে? তৃণমুল কোথায় যাবে তাদের অভাব অভিযোগ নিয়ে? শাহীন মাহমুদ লেখেন, আপনি আমাদের মতো হাজারো কর্মীর কাছে আগের মতোই ভালবাসার পাত্র হয়ে থাকবেন।

সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক পদ হারিয়ে নগরীর লক্ষ¥ীপুরে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে আসাদুজ্জামান আসাদ বলেছেন, দলীয় প্রধান সব বুঝে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নিয়েছেন। সমর্থকদের মেনে নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।