প্রকৃতির গায়ে হলুদ শাড়ী,মাতাল মৌমাছিরা।

মাহফুজ রাজা,কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
সরিষা ফুল হলো সৃষ্টিকর্তার সুন্দরতম সৃষ্টি, যা পৃথিবীকে আরো সুন্দর করে তোলে।

হুমায়ুন আজাদের এ উক্তি যেন জীবন্ত রুপ পেয়েছে। হেমন্তের বিস্তৃত মাঠজুড়ে সোনালী ধানের পাশে সবুজের বুকে হলুদের পাপড়িগুলো বাতাসে দুলছে। দূর থেকে দেখে মনে হয়, রুপের রাণী হলুদ শাড়ি গায়ে জড়িয়ে হলুদ আঁচল বিছিয়ে রেখেছে। প্রকৃতিতে হলুদের গালিচা আকৃষ্ট করে স্বজনমন, দলে দলে মৌমাছিরা মধু আহরণে ছুটে আসছে। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হলুদ মাঠ। পরিবার ও বন্ধুদের নিয়ে এমন মুহূর্তকে ফ্রেমবন্দি করে রাখছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে চলতি রবি মৌসুমে চরাঞ্চলের বেশিরভাগ জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ বছর ফলনও হয়েছে বেশ বাম্পার। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে শুধুই হলুদের সমারোহ। তবে সরিষা ফুল ও সরিষা শাকের কদর থাকায় সেই ফুল ও শাক বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন করছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। সরিষা ফুলের কদর বেশি থাকায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষা আবাদে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। জানা গেছে, সরিষার ফুল দিয়ে গৃহিণীরা মজাদার পিঠা ও বড়া তৈরি করছেন। তাই সরিষা ফুলের চাহিদা রয়েছে।

উপজেলার চর জামাইল গ্রামের কৃষক নবী হোসেন ও নুরুল হুদা সহ অনেকেই জানান, তারা এ বছর ৪বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করে ১৩ হাজার টাকা খরচ করেছেন কিন্তু ফুল শাক বিক্রি করে ৩৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন। চর বিশ্বনাথপুরের জাকির,সাহেবের চরের রুমান মেছেরা গ্রামের আলাল উদ্দিন এবং চরকাটিহারী গ্রামের আব্দুল বাতেনসহ অনেক চাষীরা জানান, সরিষা চাষে তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের তুলনায় খরচ কম তবে লাভের পরিমাণ বেশি।

তাই এবার অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি সরিষার আবাদ করেছেন এবং ফলনও হয়েছে ভালো।
এ ব্যাপারে উপজেলার কৃষি উপ-সহকারী জাহিদ হাসান রণি জানান,অনুকূল আবহাওয়া ও সরকারে বিনামূল্য বীজ ও সার দেওয়ায় কৃষকরা কম খরচে সরিষা আবাদ করে বাম্পার ফলনসহ সরিষার ফুল বিক্রি করে মোটা অঙ্কের আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তা ছাড়া পরিপক্ক সরিষা উৎপাদন করে আরও বেশি লাভবান হবেন কৃষকরা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।