পলাশী থেকে ধানমন্ডি

কার্পাসডাঙ্গা নিলকুঠি। যা এখন বিলীন।

(পর্ব ১)
এম এ জলিল
অর্থ যে অনর্থের মূল, লোভে পাপ আর পাপেই মৃত্যু এ-কথা সবার জানা। তবুও আমরা কালো টাকার কাছে সব নীতি-আদর্শ নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে সেটাই করছি যেটা করলে টাকার পাহাড় বানানো যায়। বাংলা -বিহার -উড়িষ্যার স্বাধীন নবাব সিরাজুদৌলা ১৭৫৭ সালে কাসিম বাজার কুঠিরে যখন, লর্ডক্লাইভের আহবানে সাড়া দিয়ে বাংলা মা-কে ইংরেজদের হাতে তুলে দেওয়া জন্য মীর জাফর, মীর মদন, ইয়ার লতিফ, রাইদুর্লভ, উমিচাঁদ, মীরকাসিম, জগৎশেঠ প্রমুখরা যখন নীলনকসা তৈরী করছিল খবর পেয়ে ঠিক তখনি নবাব সিরাজুদৌলা কাসিম বাজার কুঠিরে আক্রমণ করে সকলকে বন্দী করেছিল। যদি সেদিন কামানের গোলা দিয়ে কুটির সহ চক্রান্ত কারিদের উড়িয়ে দিত তাহলে দু-শত বছর বাংলা ও বাঙ্গালি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে থাকতে হতোনা। কিন্তু সেদিন তিনি তা করেনি বরং বলেছিলো সেঠজির বিরুদ্ধে আমার বলার কিছুই নেই, সেঠজি সুদের তগিদায় এসেছে আর টাকার আমরো প্রয়োজন। যার ফলে পলাশির যুদ্ধ জাতির ঘাড়ে চেপে বসে। আর এযুদ্ধে মীর জাফর আলী খাঁন কে প্রধান সেনাপতি করে যুদ্ধের দায়িত্ব দেওয়ার কারনে বান্দার বান্দা গোলাম হোসেন বলেছিল জাঁহাপনা মীরজাফর আলী খাঁন তো বিশ্বাস ঘাতক, ওকে আবার এত বড় দায়িত্ব দিলেন কেন?
একথা শুনে নবাব কি বলেছিল জানেন, আমার জায়গাই তুমি যদি নবাব হতে মীরজাফরকে করতে বন্দী খবর পেয়ে তার সিপাহী করত সিপাহী বিদ্রোহ, তোমার নবাবী ঘুচে যেত বুজলে বুদ্ধিমান গোলাম হোসেন।
কিন্তু সেই মীরজাফর আলী খাঁনের বেইমানিতেই পরাজয়ের মালা পিছনের দরজা দিয়ে এসে নবাবী মুকুট ভেদ করে গলাই গেঁথে গেল। প্রায় দু-শত বছর পরাধীনতার গ্লানি মাথায় নিয়ে ভারত উপমহাদেশের দামাল ছেলেরা স্ব-দেশি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইংরেজদের হটিয়ে মাতৃভুমিকে স্বাধীন করলো। কিন্তু পুর্বপাকিস্থান নামক দেশে পরিনত হয়ে তখনো আমরা বাঙ্গালী জাতি পশ্চিম পাকিস্থানের যাতা কল থেকে মুক্ত হয়নি- এই বাংলা জননী জন্মভুমি।


লেখক : সভাপতি, কার্পাসডাঙ্গা প্রেসক্লাব