নড়াইলের সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছে ডিসি ও এসপি

নড়াইলের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় (পিপিএম (বার)

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে

নড়াইল জেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হওয়ায় সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছে নড়াইলের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান ও পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় (পিপিএম (বার) সহ নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা। জেলায় অনুষ্ঠিত ৩টি উপজেলার ৩৭টি ইউনিয়নে সম্পন্ন হওয়া নির্বাচনে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও নিরপেক্ষ ফলাফল ঘোষণায় খুশি সকল দল ও মতের ভোটাররা। প্রায় একযুগ পরে মানুষ এমন অভূতপূর্ব এবং সুন্দর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হতে দেখেছে।

জেলায় সর্বশেষ গত রোববার (২৬ ডিসেম্বর) লোহাগড়া উপজেলার ১২ ইউনিয়নে নির্বাচনে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ, নিরপেক্ষ ও সুন্দর পরিবেশে ভোট দিতে পেরে আনন্দিত। নির্বাচনে প্রার্থীরাও প্রত্যাশা করেনি এমন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।

গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের হাট বাজার বিপণী বিতান ও চায়ের স্টলে সর্বত্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নড়াইলের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।

সব জায়গাতেই এখন সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা। প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের প্রতিজ্ঞা ভোট নিয়ে কথাবার্তা এবং বাস্তব ফলশ্রুতি নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রশংসা।

সব মিলিয়ে হারিয়ে যাওয়া ভোটের ঐতিহ্য ফিরে এসেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

ভোট গ্রহণের সাথে জড়িত ছিলেন এমন মানুষরাও প্রত্যাশা করেন নাই এতটা সুষ্ঠু ও সুন্দর নিরপেক্ষ পরিবেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নাম না বলার শর্তে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ভোটের প্রতি মানুষের বিশ্বাস উঠে গিয়েছিল। এবারের নির্বাচন মানুষের আস্থা ফেরাতে পেরেছে। নড়াইলে একসময় যারা ভোট কারচুপি এবং পেশিশক্তির নির্বাচন নিয়ে গলা ফাটাতেন তারাই এখন কথা বলছেন ভিন্ন সুরে।

লোহাগড়া সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম হায়াতুজ্জামান বলেন, ইউপি নির্বাচনের আগে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সব সময় বলেছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। তাদের কথার ব্যতয় ঘটেনি, শেষ পর্যন্ত নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।

মল্লিকপুর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শহিদুল রহমান শহীদ, লক্ষীপাশার এসএম নূর মোহাম্মাদ, দিঘলিয়ার সৈয়দ বোরহান উদ্দিন, নলদীর আবুল কালাম আজাদ পাখি ও লাহুড়িয়ার কামরান শিকদার জানান, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষ দৃষ্টি থাকায় তাদের মতো স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।

লোহাগড়া ইউনিয়নের সিদ্দিক খন্দকার জানান, আমরা খুব খুশি এমন ভালো ভোট হবার জন্য। ডিসি এসপি যে কথা বলেছিলো প্রথম তা বিশ্বাস করতে পারিনি, ভেবেছিলাম স্থানীয় এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজা হয়তো দলীয় প্রভাব খাটাবেন। কিন্তু ভোটের পর আমাদের সেই ধারণা পাল্টে গেছে।

উল্লেখ্য,জেলায় ৩৭টি ইউনিয়নে নৌকা ১৭টি, স্বতন্ত্র ২০টিতে বিজয়ী হয়েছে। নড়াইল সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৮টি নৌকা, স্বতন্ত্র ৫টি। কালিয়ায় ২টি নৌকা, স্বতন্ত্র ১০টি। লোহাগড়ায় সাতটি নৌকা এবং পাঁচটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়লাভ করেছেন।