নোয়াখালীতে সমবায় সমিতির নামে ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের হাতে সেক্রেটারী সহ ২ জন গ্রেফতার

বদিউজ্জামান তুহিন, নোয়াখালী থেকে : নোয়াখালীর চাটখিলের পপুলার সমবায় সমিতির নামে ৭ কোটি টাকা আত্মসাত করে সভাপতি সহ কর্মকর্তাদের আত্মগোপনে সেক্রেটারী ও ১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে দুদক। ২ দিন রিমান্ডে থাকার পর আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে এ ২ জন। নোয়াখালী দুদকের সহকারী পরিচালক সুবেল আহমদ জানান, চাটখিলে পপুলার সমবায় সমিতি লি: এর সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নোয়াখালীর ই আর নং ০৯/২০১৭ ও প্রধান কার্যালয় ঢাকার নথি নং দুদক / ১৪৬-২০১৬/অনু ও তদন্ত-২/নোয়াখালী সংক্রান্তে অনুসন্ধানে উদঘাটিত হয় পপুলার সমবায় সমিতি লি: এর সভাপতি আবদুর রব হেলাল, সহ সভাপতি মো: আমিন উল্যা, সদস্য সুলতানা পারভীন, সদস্য উম্মে কুলছুম, সদস্য আবদুল কাদের ও সেক্রেটারী সফিউর রহমান পরস্পর যোগসাজসে পপুলার সমবায় সমিতি খুলে সাধারন মানুষদের নিকট থেকে টাকা আমানত রেখে ৭৮ মাসে ৩ গুণ, ৫৬ মাসে দ্বিগুণ ও বাৎসরিক ও মাসিক স্কিম খুলে বিভিন্ন লোকজনসহ হাজী বেলাল হোসেন থেকে ১১ লাখ টাকা, নাসির উদ্দিন থেকে ২ লাখ, সুমি আক্তার থেকে ৫ লাখ টাকা, রাহেলা আক্তার থেকে ৩ লাখ টাকা, রোকসানা আক্তার থেকে ১ লাখ টাকা, আমেনা বেগম থেকে ৬ লাখ টাকা সহ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে ১২ জুলাই ২০০৬ থেকে ৫ আগস্ট ১৩ইং পর্যন্ত ৭ কোটি টাকা জমা নেন। এরপর থেকে এ কর্মকর্তারা সমিতির নামে বিভিন্ন স্থানে জমিন ক্রয়, মৎস প্রকল্প, ভবন তৈরি করেছে বলে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেয়ায় বিরত থাকেন। ইতিমধ্যে আমানতকারীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে চাটখিল সমবায় কর্মকর্তার নিকট আবেদন করলে সমিতির সভাপতি সহ অন্য কর্মকর্তারা আত্মগোপন করে। এমতাবস্থায় দুদকের নিকট একটি আবেদন আসলে দুদক উল্লেখিত স্মারকের আলোকে তদন্ত শুরু করে এবং তদন্তে সমিতি অফিসের কাগজপত্র কিছু রেজিস্টার উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত কাগজপত্রে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে দুদক সমিতির সেক্রেটারী সফিউর রহমান ও সদস্যকে গ্রেফতার করে দু’দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ২৫ নভেম্বর সোমবার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর নিকট প্রেরণ করেন। সমিতির সেক্রেটারী সফিউর রহমান ১৬৪ ধারায় জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট দোষ স্বীকার করেন। সমিতির সভাপতি আবদুর রব হেলাল সমিতির সদস্যদের থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা আমানত নিয়েছেন এবং সব টাকা আত্মসাত করে আত্মগোপন করেছেন। এ টাকা আত্মসাতের সাথে সভাপতি আবদুর রব হেলালের স্ত্রী ও শ্বাশুড়ি জড়িত আছে। গ্রেফতারকৃত আবদুল কাদেরও ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করে জানান, সব টাকা সভাপতি আবদুর রব হেলাল আত্মসাত করেছেন। নোয়াখালী দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ মামলার আসামীরা সমবায় সমিতি খুলে বিভিন্ন স্কিম চালু করে সমবায় আইনের বিধি বিধান লঙ্ঘন করেছে এবং প্রচুর টাকা আত্মসাতপূর্বক হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে দ: বি: ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা সহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।