নিরাপত্তাহীনতায় লালমনিরহাটের মুস্তাযীর পরিবার

লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ কলেজ শিক্ষক এস. তাবাস্সুম রায়হান মুসতাযীর তামান্না। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা উওরবাংলা কলেজে শিক্ষকতা করেন। জেলার ঐতিহ্যবাহি মুস্তাযীর পরিবারের সবাই দেশের বাহিরে থাকেন। চাকুরী সুবাদে তামান্না মুসতযীর ও তার মা শিরিন মুস্তাযীর লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কশিরাম এলাকায় তারা বসবাস করেন। ১০ বিঘা জমিতে বিশাল প্রাচীর ঘেরা বসত বাড়ি ও ব্যাপক জমি-জমা যেন তামান্না মুসতযীর ও তার মা শিরিন মুসতযীর’র কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের উপর চোখ পড়ে প্রতিবেশী একটি প্রভাবশালী পরিবারের। শুরু হয় মা ও মেয়ে’র বিরুদ্ধে নানা যড়ষন্ত্র। শুধু মা ও মেয়েকেই নয় ওই বসত বাড়ি’র নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই কর্মচারীকে দেয়া হচ্ছে হুমকি। প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে গিয়েও প্রভাবশালীদের চাপে সহযোগিতা পায়নি পরিবারটি। অবশেষে নিজেদের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বারবার অভিযোগ করেছেন তামান্না মুসতযীর। বৃহস্পতিবার নিজ বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন কলেজ শিক্ষক এস তাবাস্সুম রায়হান মুসতযীর তামান্না।
তিনি বলেন, আমার বাবা স্কুল শিক্ষক বজলে রহমান মুস্তাযীর ২০০৫ সালে মারা যান। আমার চাচা ও চাচাত ভাই-বোনরা বিভিন্ন দেশে চলে যান। দেশের প্রতি ভালাবাসায় আমরা মা ও মেয়ে দেশেই থাকি। দেশে আমার পরিবারের কেউ না থাকায় আমার ১০ বিঘা জমিতে বিশাল প্রাচীর ঘেরা ওই বসত বাড়ি ও ব্যাপক জমি-জমার উপর চোখ পড়ে স্থানীয় একটি রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী পরিবারের দুই একজন সদস্যের। তারা তাদের নিজস্ব লোকজন দিয়ে আমাকে নানা ভাবে হয়রানী করছেন। গত ২২ অক্টোবর আমার দায়ের করা একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হন খলিল নামে এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি গত ২৬ অক্টোবর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পুলিশকে সড়ক দূর্ঘটনায় খলিলের মৃত্যু হয়েছে এমন লিখিত দিয়ে লাশ গ্রহন করেন নিহতের পরিবার। কিন্তু সেই সড়ক দূর্ঘটনাকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড তৈরীর নাটক করে আমার পরিবারকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
ওই প্রভাবশালী পরিবারের দুই-একজন প্রকাশ্য বলছেন, আমার বাবা নাকি একজন রাজাকার। অথচ ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে ওই সময় আমার বাবা একাধিক কবিতা লিখেছেন যা ওই সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে।
শিরিন মুসতযীর বলেন, আমার পরিবারের কোনো পরুষ সদস্য নেই । আমি ও আমার মেয়ে দুই জন এ বাড়িতে থাকি। বসত বাড়ির চার পাশে ওই প্রভাবশালী পরিবার গুলোর বাড়ি হওয়ায় আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। নিরাপত্তা চেয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ নিয়ে গেলেও প্রভাবশালীদের চাপে আমরা আইনী সহযোগিতা পাচ্ছি না। ফলে আইনী সহযোগিতা চেয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগও করেছে আমার মেয়ে তামান্না মুসতযীর।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তাবাস্সুম রায়হান মুসতযীর তামান্না’র সাথে প্রতিবেশীদের জমি জমাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে আমরা সবাইকে যখন যেভাবে প্রয়োজন সেভাবে আইনী সহযোগিতা দিচ্ছি।