নরসিংদীর রায়পুরায় প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীর হামলায় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহত

মো.শফিকুল ইসলাম মতি, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদী রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সুমন মিয়া প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছে। সন্তান জন্মের দুইদিন আগেই পৃথিবী ছাড়তে হয়েছে তাকে। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণায় যাওয়ার সময় তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ সুমন মিয়াকে পিটিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ চশমা প্রতীকের প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকরা। বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৬টায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইসমাইল হোসেন রাজিব ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়ার মৃত্যুুর বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।

খবর পেয়ে রায়পুরা আসনের সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন রাজু হাসপাতালে ছুটে আসেন। এদিকে সুমনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তার সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহত সুমন মিয়া উপজেলার চরসুবদ্ধি ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন এর ছেলে। এদিকে ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আবিদ হাসান রুবেলের উপর গুলি ও হামলার অভিযোগ এনে উপজেলায় সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

ওই সময় মিছিলটি রায়পুরা থানা ও পরে উপজেলা অডিটরিয়ামে ও উপজেলা পরিষদে বিক্ষোভ মিছিল করেন। ওই সময় রুবেল দাবি করেন প্রতিদন্দি প্রার্থীর সমর্থকরা তার উপর হামলা ও গুলি করেন। পুলিশ, নিহত সুমনের সমর্থক ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বুধবার দুপুরে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন মিয়া প্রচারণার জন্য রায়পুরা চরাঞ্চলে গণসংযোগে যাচ্ছিল। সুমনের গাড়িবহর চরাঞ্চলের পাড়াতলী ইউনিয়নের মিরেরকান্দি এলাকায় পৌঁছালে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকদের সাথে মুখোমুখি হয়। ওই সময় আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকরা সুমনের গাড়ি বহরে হামলা চালায়। ওই সময় তারা সুমনের উপর এলোপাথারি গুলিবর্ষণ করে। তখন উভয় প্রার্থীর সমর্থকদের মাঝে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়।

তখন ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী সুমন তার গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা চালায়। এসময় রুবেলের সমর্থকরা তালা প্রতীকের প্রার্থী মোঃ সুমন মিয়াকে পিটিয়ে ও গুলি করে রক্তাক্ত করে। প্রাণে বাঁচতে আহত অবস্থায় সুমন বাশঁগাড়ী পুলিশ ফাঁড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে পুলিশ তাকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।এদিকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়ার মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে ছুটে আসেন নরসিংদী-৫ আসনের সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু। তার মৃত্যুতে রায়পুরা উপজেলায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

ঘটনার সময় নিহত সুমনের সাথে থাকা তার চাচাতো ভাই টিটু জানিয়েছেন, গণসংযোগ ও প্রচারণায় যাওয়ার সময় প্রতিদ্বন্দি ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থরা অতকিত হামলা চায়ায়। ওই সময় তারা সুমনকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ শুরু করেন। পরে তারা সুমনসহ আমাদেরকে পিটাতে থাকে।

হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়। আমি রুবেলের বিচার চাই। সুমনের নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নিতে তাকে হত্যা করা হয়। নরসিংদী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রায়পুরা সার্কেল) আফসান আল আলম বলেন, প্রতিদ্বন্দি দুই প্রার্থী ও তার সমর্থকদের হামলা সংঘর্ষে সুমন মিয়া নিহত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।

হামলার সময় তিনি প্রাণে বাঁচাতে পালানোর চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।রায়পুরা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহতের খবর আমরা ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পরবর্তীতে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।