নড়াইলের পল্লীতে সেলুনে ঢুকে হিন্দু নাপিতকে মারপিট

উজ্জ্বল রায় নিজস্ব প্রতিবেদক নড়াইলঃ   নড়াইলের পল্লীতে  সরকারি নির্দেশনা অমান্য করার কথিত অভিযোগে একজন নরসুন্দর (নাপিত) কে মারপিট করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা। মারপিটে মারাত্মক জখম নরসুন্দর মিলন (২৭) লোহাগড়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি লোহাগড়ার বসুপটি গ্রামের মধু সরকারের ছেলে। অভিযোগে জানা গেছে, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লোহাগড়া থানার এসআই মাহফুজ লক্ষীপাশা চৌরাস্তা বাজারের বটতলা পাশর্^বর্তী বন্ধ থাকা মিলনের সেলুনে ঢুকে মিলনকে মেহগনি গাছের ডাল দিয়ে বেদম মারপিট করেন। মারপিটে মিলন আহত হন। উজ্জ্বল রায় নিজস্ব প্রতিবেদক নড়াইল জানান, খবর পেয়ে বাজার থেকে মিলনের স্ত্রীসহ আত্মীয়-স্বজন আহত মিলনকে লোহাগড়া হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। লোহাগড়া হাসপাতালের নতুন ভবনের বারান্দায় রক্তাক্ত মিলন জ্ঞান হারিয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ছিলেন। হাসপাতালে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিষয়টি নজরে আসে। মিলন অভিযোগ করেন, আমি দোকানের দরজা (সার্টার) বন্ধ করে ভেতরে বসে একজনের চুল কাটছিলাম। দোকানে আমার ভাগ্নেসহ তিনজন ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ এসআই মাহফুজ এসে দোকানের দরজা খুলে দোকান কেনো খুললাম বলতে বলতে মেহগনি গাছের ডাল দিয়ে বেদম মারপিট শুরু করেন। আমি মারপিট সহ্য করতে না পেরে দোকান থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যাই। পরে স্ত্রীসহ আত্মীয়-স্বজন আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। মারপিটের সময় এসআই আমার দোকান থেকে দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে যান। আমাকে কেউ এসআইকে দিয়ে মারপিট করিয়েছে বলে তিনি জানান।এসআই মাহফুজ মারপিট করার কথা স্বীকার করে বলেন, মিলন দোকানের মধ্যে ৪/৫ জনকে নিয়ে অনলাইনে গেম জুয়া খেলছিল। আগেও কয়েকবার সতর্ক করেছি। পাশর্^বর্তী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ ছিল। লোহাগড়া হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মিলনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। লোহাগড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আমানুল্লাহ আল বারী জানান, মিলনের দুটি মোবাইল ফোন আমার হেফাজতে রয়েছে। ফোন তাকে দিয়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, মারপিটের বিষয়টি শুনেছি। দেখছি কি করা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নড়াইলের লোহাগড়ায় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে করোনার প্রভাব থেকে রক্ষা করতে প্রশাসন ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে নড়াইলের জেলা প্রশাসক গত ১০ এপ্রিল গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। গণবিজ্ঞপ্তিতে জনসমাগম এড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করে কয়েকটি নির্দেশনা মেনে চলতে তাগিদ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুয়ায়ী কাঁচাবাজার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ওষুধের দোকান, কৃষি পণ্যের দোকান ব্যতীত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান বিকাল ৩ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। প্রশাসন মাইকিং করে অন্য সকল প্রকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবসময় বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দিয়েছে। উজ্জ্বল রায় নিজস্ব প্রতিবেদক নড়াইল।