দুর্গাপূজা নাকি পরীক্ষা, দ্বিধায় জবি শিক্ষার্থীরা

রাতুল সাহা, জবি প্রতিনিধিঃ দুর্গাপূজার পর সেমিস্টার পরীক্ষা চান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বরাবর একটি আবেদন করেন তারা।

কিন্তু অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের সে আবেদন জমা নেননি।

কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, দুর্গাপূজার মধ্যে পরীক্ষা থাকায় ডিনদের সঙ্গে আমাদের সভা হয়েছে।

সেখানে শিক্ষার্থীদের অসুবিধার বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

তারা চাইলে শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে পূজার পরই পরীক্ষা নিতে পারবেন।

জানা যায়, গত ৭ সেপ্টেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় আগামী ৭ অক্টোবর থেকে সশরীর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

তবে এবছর নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী ১১-১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালন করা হবে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগ পূজার দিনে পরীক্ষা দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা পূজার পর পর্যাপ্ত বিরতি দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান।

শিক্ষার্থীদের এ দাবির প্রেক্ষিতে রোববার উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে ডিনস কমিটির এক সভায় ১১-১৬ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

কিন্তু সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীই গ্রামে। আগামী ৭ অক্টোবর যদি তাদের পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ক্যাম্পাসে আসতে হয়। তবে পরীক্ষার মধ্যেই আবার পরিবারের সঙ্গে পূজা উদযাপনের জন্য গ্রামে ফিরতে হবে এবং পূজা শেষে তাড়াহুড়ো করে এসেই আবার ১৭ তারিখ পরীক্ষায় বসতে হবে। কারণ অধিকাংশ বিভাগেই পূজার একদিন পরেই পরীক্ষা রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক, শারীরিক ও অর্থনৈতিক চাপ পড়বে।

এ বিষয়ে ভূমি ব্যাবস্থাপনা ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়া ধর আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবির প্রেক্ষিতে ১১-১৬ অক্টোবর কোনো পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে পূজা উদযাপন শেষে একদিনের মধ্যে আবার ঢাকায় ফিরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া কঠিন। তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি বিভাগ পূজার পর মাত্র একদিন বিরতি দিয়েছে৷ অন্তত দুইদিন যদি বিরতি দেওয়া হতো পূজার পর তাহলে আর এ চাপে পড়তে হতো না৷ বছরে এই পুজোর ক’টা দিন ছুটি নেবে বলে চাকরিজীবীরা সারা বছর ছুটি নেন না। আমরা এ দুর্গাপূজা উদযাপন করি অনেক সাধ-ইচ্ছা নিয়ে। পরিবারের সঙ্গে সবাই পূজা উদযাপন করি। তাই সার্বিক দিক মিলিয়ে পূজার পর পর্যাপ্ত বিরতি দিলে খুব ভালো হতো।

রিয়া ধর সহ অন্যান্য ছাত্র ছাত্রীরা আরও বলেন, আমরা এ মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এটি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট। আমরা চাই অন্তত আর ২ দিন বেশি বিরতি দিয়ে ১৯ বা ২০ তারিখ থেকে পরীক্ষা নেওয়া হোক।