দর্শনায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ

দর্শনা অফিসঃ চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে দর্শনা সরকারি কলেজের উদ্যোগে কলেজ প্রাঙ্গনে এ পূস্পমাল্য অর্পণ আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরন করে বুদ্ধিজীবী সৃতিস্তম্ভে পূষ্পমাল্য অর্পন করেন দর্শনার রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

পূষ্পমাল্য অর্পনের পর সকল শহীদের স্বরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন শেষে দর্শনা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মফিজুর রহমান সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি থেকে আলোচনা করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে আলোচনা করেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মনজু, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলী মুনসুর বাবু, দর্শনা সরকারি কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউপি চেয়ারম্যান এসএএম জাকারিয়া আলম।

এসময় আলোচনায় অতিথিদয় বলেন, ১৯৭১ সালে বিজয়ের ঠিক দুই দিন আগে পাকিস্তানি শাষকরা বুঝতে পেরেছিলো বাংলাদেশ বিজয়ের দ্বার প্রান্তে পৌঁছে গেছে। সেই কারনে দেশ ও জাতিকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য শৈরাচার শাসকরা এদেশকে মেধাশূন্য করার লক্ষে বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের নির্মম ভাবে হত্যা করেছিলো। তার মধ্যে তৎকালিন সময়ে ৩ জন বুদ্ধিজীবী শিক্ষক ছিলেন। যাদেরকে পাক বাহিনী ধরে নিয়ে যায়। পরবর্তিতে তাদের লাশও পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে ছিলেন, অধ্যক্ষ লতাফত হোসেন জোয়ার্দ্দার, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক নাসির উদ্দিন। এই দিনে দর্শনা সরকারি কলেজের ৩জন বুদ্ধিজীবী শিক্ষক শহীদ হয়। তাই প্রতি বছরই দর্শনা সরকারী কলেজের পক্ষ থেকে শহীদদের স্বরনে এ অনুষ্ঠান করা হয়ে থাকে।

অনুষ্ঠানে দর্শনা সরকারি কলেজের প্রভাষক (বাংলা) আশরাফুল ইসলাম ও দর্শনা কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু’র সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন- দর্শনা সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক জমশেদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা- রুস্তম আলী, জাহাঙ্গীর আলম, জয়নাল আবেদীন, মহসীন আলী, তাওহার হোসেন। কাউন্সিলর- সাবির হোসেন মিকা, বিল্লাল হোসেন, খালেকুজ্জামান, দর্শনা গণ উন্নয়ন গ্রন্থাগারের নির্বাহী পরিচালক আবু সুফিয়ান, দর্শনা সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি হাসানুজ্জামান হাসান, দর্শনা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম হুমায়ুন কবীর, দর্শনা পূর্ব রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হারুন অর রশিদ, দর্শনা পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আমির হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা- হুমায়ূন হুমায়ূন কবির, আব্দুল বারি, শফিকুল ইসলাম, দর্শনা পৌর যুবলীগের সভাপতি আশরাফ আলম বাবু,
যুবলীগ নেতা- আবু ফয়সাল, দর্শনা থানা সেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ইসলামুল হক আল-আমীন, দর্শনা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ, সহ-সভাপতি আশরাফুজ্জামান রিপন, কামরুল হাসান লোমান, মিল্লাত হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রভাত আলম, দপ্তর সম্পাদক রায়হান হোসেন, প্রচার সম্পাদক অপু সরকার সহ কলেজের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। অনুষ্ঠান শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া পরিচালনা করা হয়।

এদিকে দর্শনা সরকারি কলেজের অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের ছেলে শহীদ বুদ্ধিজীবী সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ৭১ এর সক্রিয় সদস্য তানভির ইসলাম এই অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত থেকে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, দর্শনা মানেই আমার জন্মভূমি ও অনেক স্মৃতি বিজড়িত স্থান যেখানে রয়েছে আমার বাবা (শহীদ বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম) এর শেষ স্মৃতি যা আমাকে এখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগিয়ে তোলে এবং গর্ব করে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে আমি একজন বুদ্ধিজীবী শিক্ষকের সন্তান আমি দর্শনার সন্তান। তিনি আরও বলেন, আজকের এই মহতী আয়োজন যাদের উদ্যোগে হয়েছে এবং প্রতি বছরই এই দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্বরনে পালন করে থাকেন সেই প্রতিষ্ঠান দর্শনা সরকারি কলেজ এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি শহীদ বুদ্ধিজীবী সন্তানদের সংগঠন প্রজন্ম ৭১ এর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।