তারেক-এরশাদ সমঝোতা চক্রান্ত ফাঁস

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ঢাকা ছেড়ে সিঙ্গাপুরে গিয়েই মহাজোট ত্যাগের ঘোষণা দিবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ। সিঙ্গাপুরে তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তারেক জিয়ার তিন প্রতিনিধি। তারেক জিয়া তাকে ৫০ টি আসন দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলো,সঙ্গে নির্বাচনের যাবতীয় খরচ। এরশাদ-তারেকের সিঙ্গাপুর ষড়যন্ত্রের সব তথ্য সরকারের হাতে এসেছে। সিঙ্গাপুর যেতেই এরশাদ অসুস্থতার নাটক করেছেন বলে বলা হয়, বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়ার মতো অসুস্থ নন এরশাদ। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে,৯ ডিসেম্বর মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের আগে তাকে বিদেশে পাঠানো হবে না। প্রয়োজনে এরশাদকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বলা হয়েছে।

একাধিক সূত্রে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, এরশাদ তারেকের ষড়যন্ত্র শুরু হয় এ বছরের মার্চ মাস থেকে। এরশাদ ছাড়াও এই পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন সদ্য পদচ্যুত জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ জাপার প্রভাবশালী দুই নেতা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর গেলে সেখানে তারেক জিয়ার প্রতিনিধিরা এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ঐ সাক্ষাতে আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে এরশাদের সহযোগিতা চান তারেক জিয়া। এরশাদকে রাষ্ট্রপতি করা, মঞ্জুর হত্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নির্বাচনে মহাজোটের চেয়ে বেশী আসন দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয় এরশাদকে। এরশাদ প্রস্তাবে নীতিগতভাবে রাজী হলে, দুবাইয়ের একটি অ্যাকাউন্টে এরশাদের জন্য একশো কোটি টাকা রাখা হয়। সুত্রমতে, পরিকল্পনা ছিল এমন যে, মনোনয়ন নিয়ে জাপায় অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। এরশাদ তখন অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে আসবেন। সেখানে তিনি বিএনপির সঙ্গে ঐক্যের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন। তবে এরশাদ তারেকের ঐক্যের ব্যাপারে ডঃ কামাল হোসেনের আপত্তি ছিল। এজন্য শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ঐক্য না করে আসন ভাগাভাগির ঐক্যের পরিকল্পনা দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আসন বণ্টন চূড়ান্ত করতে এরশাদের ঘনিষ্ঠ জাপা নেতা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন। যেখানে এরশাদের জাতীয় পার্টিকে যে ৫০টি আসন ছাড় দেয়া হবে তাঁর তালিকা তৈরি করা হয়। সূত্রমতে, বিএনপি-জাপা সমঝোতায় যে ৫০ টি আসন জাতীয় পার্টিকে দেয়ার কথা হয়েছিল, তাতে রওশন এরশাদের পছন্দের কেউ ছিল না। এটা জানাজানি হবার পর রওশন এরশাদ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে পুরো ঘটনা জানান। প্রধানমন্ত্রী অবশ্য ঘটনা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে আগেই জেনেছিলেন। রওশন এরশাদ পুরো ঘটনা জানালে এরশাদকে পদত্যাগের চাপ দেন। এরশান তখন পদত্যাগ না করে মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দেন। এদিকে, এরশাদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায় বিএনপিও চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণা পিছিয়ে দেয় দু’দফা। অবশ্য বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, মহাজোটকে দূর্বল করার যে পরিকল্পনা তারেকের ছিলো তা বাস্তবায়ন হয়েছে। আর যাই হোক জাতীয় পার্টি এবার নির্বাচনেও পূর্ণ শক্তি নিয়ে থাকছে না।