ঠাকুরগাঁওয়ে জমির মালিকানা দ্বন্দে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা ও ভাংচুর

মোঃ ইলিয়াস আলী, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় জমির মালিকানা দ্বন্দে এক সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) রাতে ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুমিত্রা
রাণী বাদি হয়ে হরিপুর থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সুমিত্রা রানী তার পরিবার নিয়ে র্দীঘ
প্রায় ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে ওই জমিতে বসবাস করে আসছেন। ২০০৮ সালের ৩১ আগষ্ট তার সন্তান জয় কুমার সরকার কর্তৃক বন্দোবস্ত পায়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) সকালে হরিপুর উপজেলার টিএন্ডটি সংলগ্ন এলাকার হাড়িপাড়া গ্রামে ডালিমের নেতৃত্বে খোকন, সেলিম, অন্তরসহ প্রায় ২৫-৩০ জনের একটি দল সংঘবদ্ধ হয়ে সুমিত্রা রাণীর বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তার ছেলে জয় কুমারের বাড়িতে থাকা মন্দীরের প্রতিমা, আসবাবপত্র, দেয়াল ভাংচুর করে। ঐ প্রভাবশালী মহলটি ইতিপূর্বেও সংখ্যালঘু পরিবারটির বাড়িঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানায় ডালিমসহ তার লোকজন নিয়ে ঐ পরিবারটির
বাড়িঘরে হামলা ও ভাংচুর চালায়। এ ঘটনায় পরিবারের সদস্যরা
বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ঐ পরিবারে শিশু শিক্ষার্থী তিশা রাণী বলেন, আমি স্কুলে যাওয়ার সময় তারা আমাকে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হুমকি দেয়। এজন্য স্কুলে যেতে ভয় পাই।
ভুক্তভোগী সুচিত্রা রাণী বলেন, আমার বাপদাদারা এই জায়গায় বসবাস করে আসছেন। আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর তারা আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের এখান থেকে তাড়ানোর জন্য এই সব কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে ঐ মহলটি। এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করে একাধিক অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ বলে কোন সমাধান পাচ্ছি না।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ডালিমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে
তারা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানায়।
হরিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা নগেন কুমার পাল বলেন, ওই পরিবারটি পাকিস্তান আমল থেকে ওই জায়গায় বসবাস করে আসছেন। এভাবে পরিবারটির বসতবাড়িতে গিয়ে হামলা ও ভাংচুরের বিষয়টি খুবই দু:খজনক। এব্যাপারে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
হরিপুর থানার ওসি মো: তাজুল ইসলামের সাথে একাধিকবার
যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
হরিপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, ওই জমির
মালিকানা তিনটি পক্ষ দাবি করে আসছে। হরিপুর পাইলট উচ্চ
বিদ্যালয়, সরকার পক্ষে জয় কুমার এবং ডামিলের পরিবার। তবে পরিবারটি যদি অন্য কথাও যেতে চায়, তাহলে প্রশাসনের পক্ষে থেকে ব্যবস্থা নেওয়াহবে। যেহেতু ওই পরিবারটিকে সরকার কর্তৃক বন্দোবস্ত দেওয়াহয়েছে। সে জন্য আমরা পরিবারটির পক্ষে আছি এবং প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে আসছি।