ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর খাদ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলামজসিম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার যাদুরানী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলা যাদুরানী বাজারের চাউল ব্যবসায়ী মাকড়াইল শেখ নামে এক ব্যক্তি যাদুরানী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল করিম অভিযোগের বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং তিনি বলেন উপজেলার যাদুরানী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে যে প্রতারণার অভিযোগ আনা হয়েছে বিষয়টি সঠিকভাবে তদন্ত করার জন্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র বর্ম্মণকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তদন্ত কর্মকর্তা (উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা) নিখিল চন্দ্র বর্ম্মণ বলেন যাদুরানী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্যতা পাওয়া গেছে।
দু-একদিনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা করা হবে।

যাদুরানী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে অভিযোগ আনা হয়েছে এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন সে আমার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিল পরে আমাকে ব্যাংক চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করেছে।

তবে অভিযোগকারী মাকড়াইল শেখ বলেন যাদুরানী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ আমার ক্রয়কৃত ২২ টন চাউল খাদ্য গুদামে ঢুকিয়ে দিবে এই মর্মে দুইটি হাসকিং মিলের এগ্রিমেন্ট করার জন্য ৭০ হাজার টাকা নেয়। কয়েকদিন পরে তার বিশেষ প্রয়োজনে আবারও আমার কাছ থেকে আরো এক লক্ষ টাকা ধার চাই। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে সে আমাকে বারবার অনুরোধ করে। তার আকুতি মিনতি দেখে পরে আমি আমার নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে অগ্রাণী ব্যাংক (হরিপুর শাখা ) এর চেকের মাধ্যমে তাকে এক লক্ষ টাকা দেয়। যা আমার
চেকের মুড়িতে তার স্বাক্ষর করা রয়েছে।

অন্যদিকে, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার যাদুরানী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, ‘অতীব দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় যে ,গত ২৪ জানুয়ারি বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় আমার (মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ) বিরুদ্ধে একটি অসত্য সংবাদ প্রকাশিত হয় যা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এতে করে অসত্য সংবাদটি আমি ও আমার প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে বলে আমি মনে করি। আমি খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাদুরানি হাট এলএসডি হরিপুর ঠাকুরগাঁও হিসেবে উক্ত ভিত্তিহীন ও বানোয়াট প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জ্ঞাপন করছি।

এ বিষয়ে আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য এই যে, অভিযোগকারী ব্যক্তি মকড়াইল শেখ, পিতা, মৃত সাবু শেখ, গ্রাম: নন্দগাও, হরিপুর, ঠাকুরগাঁও- একজন খুচরা চাল ব্যবসায়ী । অত্র কর্মস্থলে যোগদানের পর তার সাথে আমার পরিচয় হয়। মাকড়াইল শেখের পূর্ব পুরুষের বাড়ি জামালপুর জেলায় জানতে পারি। আমার নিজ জেলাও ময়মনসিংহ। এতে করে তার সাথে একটু গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এই সূত্র ধরে তিনি বিভিন্ন সময় ধার স্বরূপ টাকা নিয়ে দিয়েও দিতো। বিগত অনুমানিক ৩ মাস আগে তিনি আমার নিকট থেকে (এক লক্ষ সত্তর হাজার ) টাকা ধার নেন যার বিপরীতে তার একাউন্টে (০২০০০১৭৬৬৯১৬৩) হিসাব নাম্বারে একটি চেকের মাধ্যমে (এক লক্ষ) টাকা পরিশোধ করেন। কয়েকদিন পর ( সত্তর হাজার) টাকা স্থানীয় একজনের উপস্থিতিতে প্রদান করেন। উক্ত চেকটি আমি ( ২৯.১১.২০২১) ইং তারিখে ক্যাশ করি। পরবর্তীতে মাকড়াইল শেখ স্থানীয় মিল মালিকদের মাধ্যমে অতি পুরাতন, বিনষ্ট, খাবার অযোগ্য চাল খাদ্য গুদামে ঢুকানোর অপচেষ্টায় ব্যর্থ হলে তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হন। মূলত অসাধু পথ অবলম্বন করে তার দাবী পূরণ করি নাই বলে তিনি আমার বিরুদ্ধে ক্ষিপ্ত হয়ে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ আনয়ন করে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার মতো ঘৃণিত কাজ করছেন । আমি এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি ।

তবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনিরুল ইসলাম আলোচিত এ ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নিয়েছেন তা জানাযায়নি।