টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ৫৬টি ইটভাটা মালিকদের ১০ কোটি টাকার ক্ষতি

সৈয়দ মিঠুন ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

অসময়ে মাঘের শীতে টানা বৃষ্টিতে কাঁচা ইট নষ্ট হয়ে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ৫৬টি ইটভাটা মালিকদের ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।

মাঘ মাসের হাড়কাঁপানো শীতের মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। কখনো মুষলধারে, কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি- এভাবেই চলতে থাকে টানা তিন দিন। বৃষ্টির কারণে ঘাটাইল উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য প্রস্তুত করে রাখা বিপুল পরিমাণ কাঁচা ইট ভিজে গলে নষ্ট হয়ে গেছে। কয়লার দাম বেশি থাকায় ইট পোড়াতে গিয়ে লোকসানে পড়েছেন ভাটার মালিকরা। এর মধ্যে মৌসুমের শুরুতেই মাঘের শীতে আষাঢ়ের মতো বৃষ্টির হানায় মূলধনও খোয়ানোর শঙ্কায় তাঁরা।
আজ শনিবার উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ইটভাটার যেসব কাঁচা ইট রোদে শুকিয়ে পোড়ানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল বৃষ্টিতে ভিজে তা পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক ইটভাটায় পানি জমে ইট প্রস্তুত করার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সাময়িকভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন ইটভাটার পাঁচ সহস্রাধিক শ্রমিক।

উপজেলার চানতারা গ্রামের ইটভাটা মালিক মোস্তফা কামাল বলেন, মৌ ব্রিকস-১ ও মৌ ব্রিকস-২ নামে আমার দুটি ইটভাটা রয়েছে, এদিকে ঘাটাইল দেউলাবাড়ি ও বীরসিংহ কনক ভাটা প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতি হয়েছে অসময়ের বৃষ্টিতে দুই ভাটায় প্রায় ৪০ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। এক হাজার কাঁচা ইট তৈরিতে নির্মাণ খরচ হয় প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। সেই হিসাবে আমার নিজের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০ লাখ টাকা। আবার উৎপাদনে যেতে হলে নতুন করে শুরু করতে হবে। মৌসুমের শুরুতেই বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল, যা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।’
শুধু মোস্তফা কামাল নন, এমন ক্ষতির কথা জানালেন সব ভাটার মালিকই।
লাউয়াগ্রাম এলাকায় অবস্থিত ঘাটাইল ব্রিকসের ম্যানেজার মিথুন মিয়া বলেন, রোদে শুকিয়ে যেসব ইট পোড়ানোর জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল, অসময়ে বৃষ্টির পানিতে ভাটার প্রায় পাঁচ লাখ কাঁচা ইট পানিতে ভিজে গলে মাটিতে মিশে গেছে। এতে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন ধলা বলেন, ঘাটাইল উপজেলায় ৫৬টি ইটভাটা রয়েছে। এক সপ্তাহ যাবৎ ভাটা মালিকরা কাঁচা ইট তৈরি করে রোদে শুকিয়ে তা পোড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টির পানিতে গলে প্রায় সব ইটই নষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে ভাটা মালিকদের গড়ে ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে অনেক ভাটা মালিক পুঁজি হারিয়ে পথে বসবেন। অনেকেরই নতুন করে ইট প্রস্তুত ও পোড়ানোর কাজ শুরু করতে হবে। ফলে এ বছর ইটের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বাজারে ইটের সংকট দেখা দিতে পারে।