টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ৫০ হাজার টাকা প্রণোদনা ঋণ পেতে খরচ ৩০ হাজার!

সৈয়দ মিঠুন, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) থেকেঃ প্রণোদনার ঋণ পেতে জমির দলিল, অন্যান্য কাগজপত্রসহ ব্যাংকে গেলে কর্তৃপক্ষ জানায় একজন আইনজীবীর মতামত লাগবে। প্রতিটি ব্যাংকের নিজস্ব আইনজীবী রয়েছে, যেতে হবে শুধু তাদের কাছেই। 
নির্দিষ্ট করা সেই আইনজীবী সব কাগজ দেখে টাকা চাইলেন পাঁচ হাজার। এরপর কাগজপত্র জমা দিতে হবে ব্যাংকে। তারপর টাকা বরাদ্দ। না, আবারও লাগবে আইনজীবীর মতামত। মানে মতামত লাগবে দু’বার। 
আবারও আইনজীবীর সঙ্গে কথা, এবারও টাকা দিতে হবে তিন হাজার। যে পরিমাণ ঋণ দেবেন তারও অধিক মূল্যের জমির মূল দলিল জমা চাইল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সেই জমি বিক্রি করতে পারবে এমন দলিল করে দিতে বলল। মানে জমির ক্ষমতা অর্পণ। 
এবার কথা হয় দলিল লেখক ও সাব-রেজিস্ট্রারের সঙ্গে এ বাবদ খরচ পড়বে ১০ হাজার টাকা। ঋণ পরিশোধ হলে জমির মালিকানা ক্ষমতা দলিল করে দেবে ব্যাংক। এবারও একই খরচ ১০ হাজার, সেই টাকাও গুনতে হবে ঋণগ্রহীতাকে।
কথাগুলো বলছিলেন ঘাটাইল উপজেলার বিআরডিবি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন। তিনি জানালেন ওইসব খাতে মোট ২৮ হাজার টাকাসহ অন্যান্য খরচ মিলে ৫০ হাজার টাকা ঋণ পেতে টাকা খরচ প্রায় ৩০ হাজার। তাই সব হিসাব কষে প্রণোদনা ঋণ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন তিনি। 
প্রণোদনা ঋণের জন্য মার্চ মাসের শেষের দিকে তিনি গিয়েছিলেন সোনালী ব্যাংক ঘাটাইল শাখায়। কিন্তু ম্যানেজার খোরশেদ আলম খান জানালেন খরচ এত টাকা লাগে না। 
কৃষি ব্যাংক বাদে অন্যান্য ব্যাংকের ম্যানেজার জানালেন সিএমএসএমই এবং এসিডি-১ ঋণ পেতে যা যা খরচ হবে তা গ্রহীতাই বহন করবেন। তবে পুরোনো গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ঋণ পেতে টাকা খরচ কম হয়।
ব্যাংকগুলোর দেওয়া তথ্যমতে, কৃষি ব্যাংকসহ সোনালী, জনতা, রূপালী, ও অগ্রণী মিলে এক হাজার ১২৭ জন গ্রাহককে ৬ কোটি ৭২ লাখ ৩০ হাজার টাকা প্রণোদনা ঋণ দিয়েছে। সর্বনিম্ন ৫০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৪০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেয়েছেন একজন গ্রাহক। 
পূবালী ব্যাংক ঘাটাইল পাকুটিয়া শাখার ম্যানেজার মনজুরুল করিম জানান, তার শাখা থেকে কাউকে প্রণোদনা ঋণ দেওয়া হয়নি। কিন্তু ওই শাখার গ্রাহক অনোয়ার হোসেন মিলন অভিযোগ করে বলেন, তার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ চাইতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দেয়নি।
ইউএনও অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, প্রণোদনা ঋণের ক্ষেত্রে এমন অনিয়ম হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।