টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে অটোচালক খুনে ভাই আটক

সৈয়দ মিঠুন, ঘাটাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে এক অটোরিকশা চালককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যার শিকার হওয়া নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম (৪০) এই অভিযোগ জানিয়েছেন। এই বিষয়ে তিনি বাদী হয়ে সাতজনের নামোল্লেখ করে ঘাটাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া এই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাইকে আটক করেছে ঘাটাইল থানা পুলিশ।
নিহতের নাম তোতা তালুকদার (৫২)। তিনি উপজেলার ১ নং দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের ঝুনকাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের মফেজ তালুকদারের ছেলে। তিনি পোড়াবাড়ী শাখা ভ্যান রিক্সা অটো ও নসিমন শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য। এছাড়াও তিনি কৃষিকাজের সাথে জড়িত ছিলেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
জানা যায়, স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) রাতে ঘাটাইল থানার এসআই আসাদুজ্জামানের (আসাদ) নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য উপজেলার ঝুনকাইল দক্ষিণপাড়া এলাকায় গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান এসআই আসাদুজ্জামান।
নিহতের স্ত্রী নাজমা বেগম অভিযোগ করে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, জমিজমা সংক্রান্ত ও পারিবারিক কলহের জের ধরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আমার স্বামীকে মারপিট করেন আমার ভাসুর, দেবর ও তার সন্তানরা। এই ঘটনার প্রতীবাদ করতে গেলে আমাকেও গাছের সঙ্গে বেঁধে মারপিট করে তারা। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারদের কাছে মারপিটের বিচার দিতে গিয়ে আমার স্বামী আর বাড়ী ফিরে আসেননি। পরে রাত নয়টা সময় গ্রামবাসীর কাছে সংবাদ পেয়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জনৈক কোরবান আলীর ধান ক্ষেতে আমার স্বামীর লাশ দেখতে পাই বলে জানান নাজমা বেগম।
নিহত তোতা তালুকদারের একমাত্র ছেলে মাসুম তালুকদার (১২) সে সময় কান্নারত অবস্থায় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার কাকা, কাকাতো ভাইয়েরা মিলে আমার বাবাকে মেরে ফেলেছে। আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবলু মিয়া জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে দশটার সময় স্থানীয়দের থেকে সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সেসময় জনৈক কোরবান আলীর ধান ক্ষেতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তোতা তালুকদারকে দেখতে পাই। পরে তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয়দের সহায়তায় ঘাটাইল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে ঘাটাইল থানার এসআই আসাদুজ্জামান জানান, এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে সাতজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। পরে অভিযান চালিয়ে মামলার আসামী ও নিহতের ছোট ভাই রফিকুল ইসলামকে (৩৮) আটক করে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।