ঝিনাইদহে কৃষকের ধান বিক্রির চেক ছিনতাইয়ে বাঁধা বাড়ীঘর ভাংচুর

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহে আমন ধান সংগ্রহ অভিযানে মধ্যসত্বভোগীদের কালো থাবা বিস্তার করেছে। তালিকা হাতে নিয়ে দালালরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে জোর পুর্বক বরাদ্দ ছিনিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই কাজে কতিপয় ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য ও দলীয় মস্তানরা জড়িত। ফলে কৃষকরা ধান দিতে পারছেন না। শুরুতের কৃষকদের মাঝে ব্যাপক প্রচারের অভাব ও লটরী পক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় অভ্যন্তরীণ আমন ধান সংগ্রহে সচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হলিধানী ইউনিয়নে মাঠে জমি নেই বা ধান চাষ করেনি এমন ব্যক্তিরা লটারীর মাধ্যমে ধানের বরাদ্দ পেয়েছেন। হরিণাকুন্ডুর একটি গ্রামেই নাকি ৫০ জন কৃষক লাটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে সারা জেলায় মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে নির্বাচিত কৃষককে ব্যাংকে নিয়ে তার কাছ থেকে জোরপুর্বক চেক স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সোমবার এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে সদর উপজেলার সুরাট ইউনিয়নে। চেক ছিনতাইয়ে বাঁধা দেওয়ার অপরাধে সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতার বাড়ী ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। জানা যায়, সোমবার বিকেলে চুটলিয়া গ্রামের নির্বাচিত কয়েকজন কৃষককে শহরের হামদহ অগ্রনী ব্যাংকে নিয়ে আসেন সুরাট ইউনিয়নের শাবু ও কল্যানপুর গ্রামের মৃত শরাফতের ছেলে জিয়া। শাবু ও জিয়া কৃষকদের ২ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে চেকের পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা চুটলিয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান চঞ্চল বাঁধা দিলে উভয়ের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। বিকেলে জিয়া ও শাবুর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন লোক মোটর সাইকেল যোগে চঞ্চলের বাড়ীতে হামলা চালায়। এসময় তারা ভাংচুর ও লুটপাট করে। চঞ্চলের পিতা ও মাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় চঞ্চল বাদী হয়ে সদর থানায় একটি এজাহার জমা দিয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মঈন উদ্দিন বিষয়টি নিয়ে বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা স্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে হামদহ অগ্রনী ব্যাংকে মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায় কৃষকের চেয়ে ফড়িয়া, দালাল ও মধ্যসত্বভোগীদের ভীড়ই বেশি। কৃষকের কাছ থেকে ৪/৫ হাজার টাকা করে বরাদ্দপত্র কিনে নিচ্ছে। আর এই বেচা বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে। আব্দুর রশিদ নামে এক কৃষক জানান, হালখাতা করার জন্য আমন ধান ওঠার পরপরই তিনি ধান বিক্রি করে দায় দেনা শোধ করেছেন। তার ঘরে ধান বিক্রির পর তিনি কৃষি বিভাগ থেকে লটারিতে বরাদ্দপত্র পেয়েছেন। এখন এই বরাদ্দপত্র কিনতে দালালরা তার বাড়ি ভিড় করছেন। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বদরুদ্দোজা শুভ’র বক্তব্য নিতে তার সরকারী মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।