ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসনের স্বপ্ন পূরণ : ফুলের রাজধানীতে দর্শনার্থীদের উপছে পড়া ভীড়

আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা : যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা প্রশাসনের স্বপ্ন পূরণে ফুলের রাজধানীকে দেশবাসীর কাছে উপস্থাপন করতে ৪দিনের মেলা শেষ হতে না হতেই দর্শনার্থীদের উপছে পড়া ভিড়। সরকারি ভাবে দেশে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার হওয়ায় উপজেলার গদখালী, পানিসারা ও নাভারণ ইউনিয়নে ফুল বাগান দেখতে দর্শনার্থীদের আনা গোনা অন্যবারের চেয়ে বেশি হয়েছে বলে লক্ষ্য করা গেছে। শুক্রবার ও শনিবার সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ৩টি ইউনিয়নের প্রায় ৫-৬ কিলোমিটারের সকল রাস্তা ঘাট ফুল প্রেমীদের দখলে।

মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি… গোবিন্দ হালদারের কথা, আপেল মাহমুদের কন্ঠ ও সুরে এই গানটিকে স্লোগান হিসেবে ধরে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ফুলের রাজধানী বা ফুলের রাজ্য বলে পরিচিতি করাতে জেলা প্রশাসক’র সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও উপজেলা প্রশাসন’র আয়োজনে ৪ দিনব্যাপী ফুল উৎসব সম্প্রতি ৩১ জানুয়ারী-০৩ ফেব্রুয়ারী শেষ হয়েছে। আর এই আয়োজন স্বার্থক করতে স্থানীয় পর্যায়ের সংবাদকর্মীদের সার্বিক সহযোগিতায় প্রচারের এক পর্যয়ে বর্তমানে তুলনামূলক শীতের প্রকোপ ও ঘন কুয়াশা কমার করণে কিছুটা শৈত্যপ্রবাহ কমেছে। এ সুযোগে ফুলের রাজধানীতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। তাদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যায়।

সকাল থেকে শুরু হয়ে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে দর্শনার্থীদের সংখ্যা। অবস্থা এমন হয় যে, ভিড় সামলাতে স্টলের দায়িত্বরত কর্মী ও স্থানীয় পর্যায়ে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হিমশিম খেতে হয়েছে।

আসন্ন ১৪ ফেব্রুয়ারী ভালবাসা দিবস, পহেলা ফাল্গুন বসন্ত বরণ, ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস এই তিন দিবসেই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে ব্যবহৃত হয় দৃষ্টিনন্দিত বিভিন্ন প্রজাতির ফুল। উপজেলার গদখালী, পানিসারা ও হাড়িয়া অঞ্চলে ক্ষেতের ফুলগাছ পরিচর্যায় মহাব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।

ফুল বাজারে প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে গোলাপ, গ্লাডিউলাস ১৫-২০ টাকা, রজনীগন্ধা, জারবেরা ১০-১৫ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ৩-৫ টাকা, গাঁদা ফুলের প্রতি হাজার ৩০০-৪৫০টাকা এবং ফুল বাঁধাইয়ের জন্য কামিনীর পাতা ও জিপসির আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাজারে ফুলের দামও বাড়ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ফুলের দাম বেড়েছে বেশ কয়েক গুণ। এটা থেকে ফুলের রাজধানীতে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা ফুল কিনতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

ফুলের রাজধানীর বেড়াতে আসা মহাসিন আলম নামের এক দর্শনার্থী বলেন, বেশ কিছু দিন যাবৎ পেপার-পত্রিকা ও ফেসকুকে ফুলের রাজধানী সম্পর্কে জানতে পেরে এখানে আসার জন্য মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। তার জন্য আমার বান্ধবী সহ এখানে বেরাতে এসেছি। স্থানটি খুবই সুন্দর। তবে এখানে আসার জন্য রাস্তা খুবই ছোট, রাস্তার পরিধি বৃদ্ধি করা দরকার, এখানে আসতে গেলে বিভিন্ন সময় কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাহিরের মটরসাইকেল দেখলে হয়রানী করেছে এছাড়াও ফুল মোড়ে দশ টাকা দিয়ে একটি বল কিনে স্পিডের বোতলে লাগানো নামের ২টা জুয়া খেলা বন্ধ করতে হবে। এসব থেকে বেরাতে আসতে না পারলে দর্শনার্থীদের মনে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে বলে আমি মনে করি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিতান কুমার মন্ডল জানান, ফুলের রাজধানীকে দেশবাসীর কাছে পরিচিতির জন্য আমার যেটা করার দায়িত্ব আমি সেটা করবো। আসন্ন ৩ দিবসকে ঘিরে অন্তত শতকোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আমরা আশাবাদি।