জীবননগরে নিজ কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে পিতাকে গ্রামবাসীর উত্তম-মাধ্যম, ধর্ষক পিতা পুলিশ হেফাজতে

এইচ এম হাকিম, স্টাফ রিপোর্টারঃ চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার বাঁকা গ্রামে নিজ কন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রামবাসী পিতাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশ হেফাজতে দিয়েছে। গত ৮-১০ দিন আগে নিজ কন্যাকে ধর্ষনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার বিকাল ৫টার দিকে বিষয়টি জানাজানি হলে গ্রামবাসী ধর্ষক পিতা আব্দুল খালেককে (৫০) বাড়ীতে আটকিয়ে উত্তম-মধ্যম দেয়।জীবননগর থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছালে উত্তেজিত জনতা তাকে পুলিশে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় জীবননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ধর্ষক আব্দুল খালেক বাঁকা পুর্বপাড়ার মৃত আজির বক্সেসর ছেলে।

ধর্ষনের শিকার ছাত্রীর মা পাপিয়া বেগম বলেন, ছোট কন্যা বাঁকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্রী। আমার স্বামী আব্দুল খালেক দীর্ঘদিন ধরে আমার উক্ত ছোট কন্যাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন হয়রানি করে আসছিল।

তিনি বলেন, আমি বাড়ীতে না থাকার সুযোগে আমার কন্যাকে যৌন হয়রানি করে আসার ঘটনাটি জানার পর আমি প্রতিবাদ করলে আমার স্বামী খালেক মা-মেয়ে দু’জনকেই জবাই করার হুমকি দেয়। আমি সব কিছু চিন্তা করে মুখ বুজে সহ্য করতে থাকি। কিন্তু আমার স্বামী খালেকের চরিত্রের কোন পরিবর্তন হয় না। সে নানাভাবে কন্যাকে যৌন হয়রানি করা অব্যাহত রাখে।

তিনি আরও বলেন, আমি অনেক সময় অনেক ঘটনা দেখেও কিছু বললে সে আমাকে কি করছি, কি হয়েছে বলে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়। ইতিপুর্বে দু’দিন আমার কন্যার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। সর্বশেষ ৭ অক্টোবর সকালে আমি কন্যাকে বাড়ীতে রেখে আমার বোনের বাড়ী মহেশপুরের ঘুগরি পান্তাপাড়ায় যায়। ওইদিন রাতে সুযোগ পেয়ে আমার স্বামী আবারও কন্যাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষন করে।

পাপিয়া বলেন, আমি বাড়ীতে এসে ঘটনার কথা শুনে অবাক হয়ে যাই। কিন্তু ভয়ে কিছু বলতে না পেরে সুযোগ খুঁজি কবে খালেক বাড়ী থেকে অন্য কোথায় যায়। এ অবস্থায় আমার স্বামী খালেক বাড়ী থেকে কুষ্টিয়া গেলে আমি গত তিন দিন আগে বাবার বাড়ী মিনাজপুর গিয়ে ঘটনার কথা বললে লোকজন আমার স্বামীকে বাড়ীতে আটকিয়ে মারপিট করে।

ধর্ষনের শিকার ছাত্রী জানায়, তার পিতা এ পর্যন্ত তাকে তিনদিন ধর্ষন করেছে। তার বাবা তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিল। ঘটনার কথা বললে দা দেখিয়ে কেটে ফেলবে বলে হুমকি দেয়ায় আমি পাড়ার কারো সাথে ঘটনার কথা বলেনি। তবে চাচাতো ভাবী ও মায়ের সাথে বলেছি।

বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বার খায়রুল ইসলাম বলেন, পিতা কর্তৃক কন্যা ধর্ষনের ঘটনা অবাক করার মত ব্যাপার। ঘটনাটি যদি সত্যিই হয়, তবে নরপিশাচ পিতার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি,
চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মোঃ আব্দুল লতিফ অমল বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি অবাহ হয়ে গিয়েছি। যা শুনেছি এ ঘটনা যদি সত্যি হয়ে থাকে তা হলে এই ধর্ষক পিতার উপযুক্ত শাস্তির দাবী করছি প্রশাসনের নীকট,ধর্ষক আব্দুল খালেকের এমন শাস্তি ব্যাবস্থা করা হোক, যাতে তার শাস্তি দেখে আর কোন বাবা যাতে এমন জঘন্য কাজ করতে না পারে।

জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন,ধর্ষক আব্দুল খালেককে গ্রামবাসী আটকিয়ে রাখার কথা শুনে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। তবে ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় উভয়পক্ষের নিকট বিস্তারিত জেনে শুনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।