চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন, চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ

বিশেষ প্রতিনিধি

হুবহু পত্রিকায় পাতায় খবরটি পড়তে উপরে না নিচে ছবিতে ক্লিক করুন

আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায় থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় পর্যন্ত সকলেই উদগ্রীব। কি হতে যাচ্ছে আগামী ১৫ মে ২০২২ বহুল আকাঙ্ক্ষিত চুয়াডাঙ্গা জেলা সম্মেলন।
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দীন নাসিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের সাথে ও সরাসরি জেলার বিভিন্ন পর্যায়ে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রাখছেন সম্মেলন সফল করার জন্য।


এদিকে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে পদ প্রত্যাশী জেলা নেতাদের। চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের সংসদ সদস্য তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করে জেলা সভাপতির বিরোধী শিবিরের নেতা আলমডাঙ্গার পৌর মেয়রকে নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে মিটিং করছেন এবং তিনি সভাপতি বিরোধীদের নিয়ে দফায় দফায় নেতাদের সাথে মিটিং করছেন। আবার জেলা সভাপতির সাথে গোপনে আঁতাত করে অনেকটা নিশ্চুপ রয়েছেন বর্তমান অসুস্থ ত্যাগি সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ। সাধারণ সম্পাদকের নিষ্ক্রিয়তায় তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা হতাশ। জেলা সভাপতি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার দলের জন্য বিশাল অবদানের কারণে তিনি এখনো কর্মীদের কাছে গ্রহনযোগ্য। শুধু আওয়ামী লীগ নয়, চুয়াডাঙ্গার সর্বস্তরের মানুষের কাছে এখনো তিনি কিংবদন্তী নেতা। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল আবেদিন খোকন, প্রফেসর ডাক্তার মাহবুব মেহেদী সভাপতি হতে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছেন। এই দুজনেই ক্লিন ইমেজের কারণে দলের সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য। আর ডা. মেহেদী শিক্ষা, দীক্ষা, জ্ঞানগরিমায় সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য। পেশাগত জীবন থেকে পারিবারিক জীবনে সফলতার শীর্ষে থাকা একজন মানব হিতৈষী মানুষ। সেক্ষেত্রে তিনিও সভাপতি পদে অন্যতম দাবীদার।

আরেকদিকে স্বর্ন ব্যবসায়ী দিলিপ কুমার আগরওয়ালা, রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দার তারাও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছেন। আরেকদিকে ছাত্র লীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক জেমস অলক চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন। ক্লিন ইমেজ, নেত্রীর প্রতি আস্থাশীলতা ও কোন উপদলে তার জড়িত না থাকার কারণে তিনি কেন্দ্রে আলোচনায় শক্ত অবস্থানে আছেন। তিনি দলের নেতা কর্মীদের মাঝে জনপ্রিয় ও গ্রহন যোগ্য। ৭৫ পরবর্তী নেতা শুন্য চুয়াডাঙ্গায় তিনি ছাত্র লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

নেতৃত্বের দৌড়ে পিছিয়ে আছেন আসাদুল বিশ্বাসসহ অনেকে। কারণ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তাঁদের বিতর্কিত ভুমিকার কারনে।

কেন্দ্রীয় সভানেত্রীর পরিস্কার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছেন খুলনা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত নেতারা। তাদের ভাষ্যনুযায়ী বিগত নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে বিদ্রোহী নির্বাচন করা, দুর্নিতী স্বজনপ্রীতি, মাদক চোরাকারবারি, অর্থপাচারের অভিযোগ, ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহীদের সমর্থন, নারী কেলেংকারী, অযোগ্য প্রার্থীদের নৌকা প্রতিক প্রদান, কর্মীদের সাথে দূর্ব্যবহার ইত্যাদি এবার বিবেচনায় আসছে। ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে এসব প্রমাণ ও চাঁদাবাজীর কল রেকর্ড এসে পৌচ্ছেছে যা আসন্ন সম্মেলনে প্রভাব ফেলবে।

দলে এবার অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে থাকতেও সভানেত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। স্বাধীনতা বিরোধী, জামাত, দলছুটরা নেতৃত্বে আসবে না তা একরকম নিশ্চিত।

বিগত দিনে খাল, বিল, হাট বাজার ইত্যাদি ও জলাশয়
দখল গরীবদের উচ্ছেদের বিষয়ে প্রচুর অভিযোগ কেন্দ্রে জমা পড়েছে এমনকি ইউপি নির্বাচনে প্রকাশ্যে নমিনেশন বানিজ্যের প্রমাণ কেন্দ্রীয় নেতাদের নিকট আছে।

আমাদের বিশেষ প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা জেলার উপজেলা সমূহে সরেজমিনে গিয়ে রিপোর্ট সংগ্রহ করে জানিয়েছেন যে কর্মীদের সাথে নেতাদের দুরত্ব ও নেতাদের আচরণে কর্মীরা ক্ষুব্ধ। তারা জেলা উপজেলায় পরিবর্তন চায়।

আলমডাঙ্গা উপজেলায় দীর্ঘদিন যাবৎ সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদকে কেন্দ্রীয় নির্শেষ সত্বেও তাকে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি ২০০৪ সালের পর দীর্ঘদিন জেলে ফাঁসীর আদেশ ঘাড়ে নিয়েও দল থেকে বিচ্চুত হননি। তিনি আসন্ন সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার যোগ্য বলে সাধারণ কর্মীরা মনে করে।

দামুড়হুদা উপজেলায় সভাপতি হিসাবে মাহফুজুর রহমান মন্জুকে মুল্যায়ন না করলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।একই ভাবে সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দাবীদার শহিদুল ওস্তাগার। অপর দিকে উপজেলায় নৌকা বিরোধী হয়ে এমপির ভাই বাবু সভাপতি হওয়ার চেস্টা চালাচ্ছে। যা আওয়ামী লীগের জন্য হবে আত্নঘাতী।

জীবননগর উপজেলায় সভাপতি উপাধ্যক্ষ নজরুল ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ অমল জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য।বর্তমান সভাপতি মর্তূজা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন বিগত উপজেলা নির্বাচনে।

চুয়াডাঙ্গা সদরে অজ্ঞাত কারনে নেতৃত্বের সংকট আছে। এখানে সদর পৌরসভাতেও তেমন কোন গ্রহনযোগ্য নেতা নেই যিনি দলীয় কর্মীদের নিকট গ্রহনযোগ্য।

তবে কর্মীরা মনে করেন এবার সভানেত্রীর কঠোরতার কারণে খুঁজে পাওয়া যাবে সৎ ও দক্ষ নেতৃত্ব তাঁরা এটাও মনে করে বিগত দিনের মত ব্যবসা বান্ধব, কালোবাজারী, হাইব্রিড, ফ্রিডমপার্টি ও চিহ্নিত স্বাধীনতা বিরোধীদের স্থান দিলে ঝরে পড়া নিবেদিত প্রাণ নেতা কর্মীরা চিরতরে হারিয়ে যাবে যা হবে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে।