চুয়াডাঙ্গায় গতানুগতিক কৃষির উপর নির্ভরশীল না হয়ে চাষীরা ঝুঁকছে ড্রাগন চাষে

আল-আমিন, কুড়ুলগাছি প্রতিনিধিঃ

 

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার চাষিরা এখন পুরনো গতানুগতিক কৃষির ওপর নির্ভরশীল না থেকে সময়ের প্রয়োজনে এবং চাহিদার কথা বিবেচনা করে ড্রাগন ফল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

 

দামুড়হুদা উপজেলার মাটি ড্রাগন ফল চাষের জন্য উপযোগী। ভালো ফলন পাওয়ায় ও লাভজনক কৃষিপণ্য হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে দামুড়হুদা উপজেলার বিভিন্ন সমতল ভূমিতে চাষ করা হচ্ছে ড্রাগন ফল।

 

এখনও স্থানীয় লোকজন ও আশপাশের জেলা থেকে আসা কিছু মানুষের মধ্যেই এর বিপণন সীমাবদ্ধ। তবে শিগগিরই বড় পরিসরে জেলার বাইরেও ড্রাগন ফল বাজারজাত করার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

বাংলাদেশের সর্ব পশ্চিমের প্রান্তিক জেলা চুয়াডাঙ্গার সমতল ভূমিতে ধান, ভুট্টা, গম চাষের সাফল্যের পর এবার দামুড়হুদার জুড়ানপুর,চিৎলা,মোক্তারপুর,কার্পাসডাঙ্গা,শিবনগর,কুতুবপুর, কুড়ুলগাছি ও পারকৃষ্ণপুর মদনা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নতুন মাত্রা যোগ করে চলছে ড্রাগন ফল চাষ। অনেকে প্রথমে শখের বশে অল্প জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্য পেয়ে শুরু করেছেন বাণিজ্যিক চাষাবাদ।

 

পুষ্টি ও ওষুধি গুণ সমৃদ্ধ ড্রাগন ফল বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন কুড়ুলগাছির রেজাউল করিম শামীম। শামীম বলেন, প্রাথমিকভাবে পরীক্ষার জন্য ৮০টি চারা লাগিয়েছি। ড্রাগন ফল সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। অন্য ফসল চাষের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে ড্রাগন চাষ করা যায়। আর তাতে লাভও হয় বেশি।

 

 

ড্রাগন ফল প্রতি কেজি পাঁচশ’ থেকে সাতশ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে স্থানীয়দের কাছে এ ফলের বেশ চাহিদা রয়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন এসে মাঝে মধ্যে ড্রাগন ফল কিনে নিয়ে যান।

 

কার্পাসডাঙ্গা এলাকার রাসেল বলেন, ড্রাগন ফলের গাছ লাগানোর দুই বছরের মধ্যে ফল পাওয়া যায়। অল্প জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছি। তাই এখনও বাণিজ্যিকভাবে বাইরে বিক্রি করা হচ্ছে না। আশা করি, শিগগিরই বাণিজ্যিকভাবে চুয়াডাঙ্গা সহ বাইরের জেলাতে বিক্রি করা হবে।

 

জানা যায়, রোগ বালাই মুক্ত ড্রাগন গাছ একবার লাগালে শুধু পরিচর্যা করলে ৩০ থেকে ৪০ বছর এক নাগারে ফল দেয়। ড্রাগন ফল মিষ্টি ও হালকা টক জাতীয় স্বাদের হয়ে থাকে।

 

এ ফলে নানা পুষ্টিগুণ রয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মাটি ড্রাগন ফল চাষের উপযোগী হওয়ায় এবং পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করে সাফল্য পাওয়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

 

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার, কৃপাংশু শেখর জানান, কৃষকের আয় বৃদ্ধি ও পুষ্টির চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ড্রাগন ফল চাষে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে তদারকি এবং এর চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানানো হচ্ছে। ফলে অনেক কৃষক ড্রাগন ফল চাষে এগিয়ে এসেছেন।

 

দামুড়হুদাতে ড্রাগন ফল চাষিদের গড়ে তোলা ছোট ছোট বাগান দেখে অন্য কৃষকরা আগ্রহী হবেন। কৃষি সম্প্রসারণ কার্যক্রমের আওতায় কৃষকদের সার্বিক সহায়তা দেওয়া গেলে বাড়বে ড্রাগন ফলের উৎপাদন।