চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ইয়াবা-ফেনসিডিলের রমরমা ব্যবসা, আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ

আতিকুজ্জামান চঞ্চল, প্রতিবেদক, জীবননগর (চুয়াডাঙ্গা): চুয়াডাঙ্গা জীবননগর উপজেলায় কোন ভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না ইয়াবা-ফেনসিডিলের রমরমা ব্যবসা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝেমধ্যেই অভিযান চালায়। ছোটখাটো কিছু চালানও আটক করলেও হোতারা ধরা ছোয়ার বাইরে।

তারপরও যেন অপ্রতিরোধ্য মাদক ব্যবসায়ীরা। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে যেখানে সেখানে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। অলি-গলিতে দেখা যাচ্ছে মাদকসেবীদের। প্রায়ই তাদের দেখা যায় মাতলামি করতে। অনেকেই মদ খেয়ে অসুন্থ হয়ে পড়ে। এমনকি মদ খেয়ে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

জানা গেছে, উপজেলার গ্রাম ও শহর মিলিয়ে প্রায় ৫০ টির ও বেশী পয়েন্টে গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, বাংলা মদ ও ফেনসিডিল বিক্রি হয়। পুলিশ এ ব্যাপারে নিরব ভূমিকা পালন করে।

বর্তমানে মাদকসেবীর মধ্যে স্কুল কলেজের উঠতি বয়সের তরুণদের সংখ্যা বেশি বলে জানা গেছে। এসব মাদকসেবীরা মাদকের অর্থ জোগাড় করতে প্রায়ই চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটাচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসায়ীরা জেলার জীবননগর উপজেলার বেনীপুর, হরিহরনগর, রাজাপুর, সদর উপজেলার শিংনগর, দামুড়হুদা উপজেলার মুন্সিপুর, নিমতলা, জয়নগর, সুলতানপুর, কামারপাড়া, বাড়াদী, হুদাপাড়া, ফুলবাড়ী, ঠাকুরপুর, ও পীরপুরকুল্লা সীমান্ত পয়েন্ট ব্যবহার করছে।

সীমান্ত পার হওয়ার পর বিভিন্ন হাত ঘুরে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ইয়াবা। এক্ষেত্রে মাদকের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে জেলার দুটি উপজেলার ৭টি রুটকে। মাদকের সবচেয়ে বড় গ্রাম সদর উপজেলার আকুন্দবাড়িয়া গ্রাম। মূলত এ গ্রাম থেকেই ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সারা দেশে মাদক।

এর মধ্যে বিশেষ করে জীবননগর উপজেলার হরিহরনগর গ্রামের আজিজুল ও আলমগীর সীমান্ত থেকে মাদক এনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার করছে।


এই হোতারা প্রকাশ্যে এবং গোপনে এসব মাদক দেশের অভ্যন্তরে পাচার করছে। তবে পুলিশ প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ অনেক পুরোতন।

সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, আজিজুল ও আলমগীর সীমান্ত ভারত থেকে অবাধে নিয়ে আসছে মদ, গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবাসহ বিভিন্ন মরণনেশা। নাম না প্রকাশের শর্তে কয়েকজন গ্রামবাসী বলেন,ভদীর্ঘদিন ধরে এই চক্রটি মাদকের কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রশাসনের দোহাই দিয়ে তারা এই অবৈধ কর্মকান্ড চালাচ্ছে। তাদের আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাচ্ছে। পুলিশকে করা হচ্ছে ম্যানেজ। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে হুমকি ধামকি দেওয়া নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানতে চাইলে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, পুলিশ বসে নেই। সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছে। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবিদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে।

কিন্তু আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে এসে তারা আবারো জড়িয়ে পড়ছে। মাদক নিয়ন্ত্রণের আন্দোলন পরিবার থেকে শুরু করতে হবে।

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন- সন্তানরা কোথায় যায়, কী করে, খোঁজ নিবেন না আর পুলিশকে বলবেন দেশটা ভাল করে দাও, এটা হতে পারে না। নিজ সন্তানদের খোঁজ-খবর রাখুন।

দেখবেন মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ি খুঁজে পাওয়া যাবে না। মাদক যখন সংক্রামক ব্যাধির মত ছড়িয়ে পড়ে তখন পুলিশকে নিয়ে নানান অভিযোগ আসে। তবে যৌথ উদ্যোগে জনগণ, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ কাজ করলে মাদক নির্মুল করা সম্ভব বলে জানা তিনি।