চাষিরা বিপাকে, ধান গোড়াপচা রোগে আক্রান্ত

সংবাদদাতা : যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ভবদহ অঞ্চলে ইরি- বোরো ধানে গোড়াপচা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় চাষিরা বিপাকে পড়েছেন। এতে করে চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলের বোরো চাষিরা চরম হতাশায় ভুগছেন। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, ভবদহ অঞ্চলের বিল কেদারিয়া, বিল কপালিয়া ও বিল বোকড়ের  প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ইরি-বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর প্রায় এক তৃতীয়াংশ জমির ধান ইতোমধ্যে গোড়াপচা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ক্রমেই এ রোগের বিস্তার ঘটে আক্রান্ত হচ্ছে অন্যান্য আবাদি ক্ষেতগুলো। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো চাষ  উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আবাদি জমির ধানগাছ মরে সাদা হয়ে যাচ্ছে। সাদা ধান গাছের গোড়া কালো রঙের হয়ে গেছে। শিকড়ের রঙ প্রথমে লাল হয়ে পরে কালচে বর্ণ ধারণ করছে।

ধানের জমিতে প্রচুর পরিমাণে কেঁচো কৃমি জন্ম নিয়েছে। জমির মাটির স্বাদ নোনতা হয়ে গেছে। 

ক্ষতিগ্রস্থ চাষিরা জানান ,চলতি মৌসুমে  ভবদহ গেটের কপাট খুলে দেয়ায় ওই অঞ্চলের  শ্রীহরি নদী, মুক্তেশ্বরী নদী ও সীমানা খাল দিয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকে পড়েছে  বিলের মধ্যে। ফলে জমির লবণাক্ততা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আবার দিনের বেলায় প্রখর রৌদ্র ও রাতে ঠাণ্ডার কারণেও ধানের ক্ষতি হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা  দায়সারা গোছের পরামর্শ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন।

ভবদহ অঞ্চলের  সুজাতপুর গ্রামের কৃষক জনি দাস  জানান, আমি এবার তিনবিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। আবাদ করা সবটুকু জমির ধান গোড়াপঁচা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগ প্রতিরোধের জন্য সর্বপ্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেও কোনো সুফল পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে এবার একমুঠো ধানও পাবো না। আমি এখন যে কি করবো, কিভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকবো?

মণিরামপুর উপজেলার ভবদহ অঞ্চলের দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রেখা রানী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের  লবণাক্ততা দূরীকরণে জমিতে বেশি পরিমাণে মিঠা পানি (স্বাদু পানি) প্রয়োগ, জমিতে পানি ধরে রাখা, থিয়োভিট ও জিপসাম জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার  বলেন, অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যরহারের কারণে বোরো ধানের গোড়াপঁচা রোগ দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পারদর্শন করে এ রোগ-প্রতিরোধে চাষিদের সার্বিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।